পোলট্রি শিল্পে ঝুঁকছে বেকার-প্রবাস ফেরতরা

  • হাসান মাহমুদ শাকিল, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, লক্ষ্মীপুর, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

পোলট্রি শিল্পে ঝুঁকছে বেকার-প্রবাস ফেরতরা। ছবি: বার্তা২৪.কম

পোলট্রি শিল্পে ঝুঁকছে বেকার-প্রবাস ফেরতরা। ছবি: বার্তা২৪.কম

লক্ষ্মীপুরে পোলট্রি শিল্পের প্রসার ঘটছে। এতে বেড়েছে মাংস ও ডিম উৎপাদন। এ ব্যবসাতে ঝুঁকছে বেকার যুবক ও প্রবাস ফেরত ব্যক্তিরা। ইতোমধ্যে এ জেলায় ব্যাপক হারে বাণিজ্যিক পোলট্রি খামার গড়ে উঠেছে।

স্বল্পমেয়াদে এটি লাভজনক হলেও খামারিদের অভিযোগ, ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে চাহিদার সময় পোলট্রির খাবার ও মুরগির বাচ্চার দাম বাড়িয়ে দেয়।

বিজ্ঞাপন

এদিকে স্বাস্থ্যকর মাংস ও ডিম উৎপাদনে খামারিদের পরামর্শ দিয়ে মাঠ পর্যায়ে কাজ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর কর্মকর্তারা।

জানা গেছে, একদিনের একটি ব্রয়লার মুরগি ৪০-৬০ টাকার মধ্যে কিনতে হয়। এটি বিক্রির উপযোগী হতে ২৮-৩০ দিন প্রয়োজন হয়। বর্তমানে বাজারে ১৪০-১৪৫ টাকায় প্রতি কেজি মুরগি বিক্রি হয়। আর মুরগির পাইকারি প্রতি কেজি মূল্য ১২৮-১৩০ টাকা। একটি লেয়ার মুরগি এক থেকে দেড় বছর বয়সে ডিম দেওয়ার উপযোগী হয়। এসব মুরগিকে প্রতিদিন দু’বেলা খাবার দিতে হচ্ছে। প্রতিটি ডিমের বর্তমান পাইকারি মূল্য সাড়ে ৭ টাকা।

বিজ্ঞাপন

জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, লক্ষ্মীপুর সদর, রায়পুর, রামগঞ্জ, রামগতি ও কমলনগরে ১১২১টি ব্রয়লার ও ২৫৩টি লেয়ার মুরগির খামার রয়েছে। এরমধ্যে ৮১৯টি ব্রয়লার ও ১০১টি লেয়ার মুরগির খামার রেজিস্ট্রিকৃত।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Feb/18/1550487997445.jpg

কয়েকটি মুরগির খামারে গিয়ে দেখা যায়, ব্রয়লার ও লেয়ার মুরগিগুলো খামারের ভেতরে বিচরণ করছে। খামারের কর্মরত যুবকরা মুরগিকে পানি ও খাবার দিচ্ছে। মুরগিগুলোও খাবার-পানি খাচ্ছে। একটি ব্রয়লার খামারে খাবার পাত্রগুলো পরিষ্কার করছে দুই যুবক। লেয়ার মুরগির খামারে কর্মরত এক যুবককে ডিম সংগ্রহ করতে দেখা গেছে।

কয়েকজন ব্রয়লার মুরগি খামারি জানিয়েছে, পোলট্রি একটি লাভজনক ব্যবসা। সাধারণত শীতকাল ছাড়া বছরের অন্যসময় মুরগির তেমন রোগবালাই হয় না। তাও ঠিক মতো ভ্যাকসিন দিতে পারলে আর কোনো সমস্যা হয় না। তবে ফিড ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে খামারিদের আর্থিক ক্ষতি হয়। বাজারে মুরগির দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই ফিডের দামও বাড়িয়ে দেয় তারা। গত মাসে ৫০ কেজি ফিডের দাম ছিল ১৩৬০ টাকা। আর এ মাসে মুরগির দাম বাড়ায় ওই পরিমাণ ফিডের মূল্য দাঁড়িয়েছে ২৪২০ টাকা। এতে প্রায় ১০০০ টাকা বেশি গুনতে হচ্ছে খামারিকে।

সদর উপজেলার উত্তর বাঞ্চানগর গ্রামের ব্রয়লার খামারি পিন্টু মিয়া বলেন, ‘আমার ওয়ার্কশপের ব্যবসা আছে। প্রায় ৩ বছর আগে আমি পোলট্রি খামার দিয়েছি। অল্প সময়ে এটি লাভজনক ব্যবসা। মুরগি লালন-পালনে বেশি সময় প্রয়োজন হয় না। সকাল-বিকেল দু’বেলা খাবার দিলেই হয়। রোগবালাই নিধনের জন্য সঠিক সময়ে ভ্যাকসিন দিলে মুরগির কোনো সমস্যা হয় না।’

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. জোবায়ের হোসেন বলেন, ‘মাংস ও ডিম উৎপাদনে বাংলাদেশের অন্যতম জেলা লক্ষ্মীপুর। স্বাস্থ্যকর মাংস ও ডিম উৎপাদন করাই হচ্ছে আমাদের লক্ষ্য। এ নিয়ে খামারগুলো পরিদর্শন ও খামারিদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। খুব শিগগিরই খামারিদের নিয়ে একটি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। আগের চেয়ে এ জেলায় পোলট্রি খামারের সংখ্যা বেড়েছে। আর এসব খামারে বেকার যুবক ও প্রবাস ফেরতরাই বেশি আগ্রহী। এর সঙ্গে ব্যাপক কর্মসংস্থানও সৃষ্টি হয়েছে।’