বার্তা২৪ এ সংবাদ প্রকাশ: বাঁশের খাঁচা থেকে হাসপাতালে আল-হাশর

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বগুড়া, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

সারিয়াকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আল-হাশর, ছবি: বার্তা২৪

সারিয়াকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আল-হাশর, ছবি: বার্তা২৪

অবশেষে চিকিৎসা শুরু হয়েছে বাঁশের খাঁচায় আটকে রাখা শিশু আল-হাশরের (৭)। মঙ্গলবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে তাকে সারিয়াকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এর আগে সকাল ১১টার দিকে দাদি খালেদা বেওয়ার কোলে চড়ে হাসপাতাল ক্যাম্পাসে আসে আল-হাশর।

হাসপাতাল ক্যাম্পাসে শিশুটিকে ছেড়ে দিলে দেখা যায়, মাটিতে মাথা আছড়ে আঘাত করছে। কেউ কাছে গেলে তার উপরও চড়াও হচ্ছে। দুপুর ১টার দিকে জোরগাছা উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ডা. তোফায়েল হোসেন ফেরদৌসের সহযোগিতায় জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. উত্তম কুমার রায় শিশু ওয়ার্ডে আল-হাশরকে ভর্তি করে নেন। বর্তমানে শিশুটি হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের ৯নং বেডে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

আগের ব্যবস্থাপত্র (প্রেসক্রিপশন) দেখে ডা. তোফায়েল হোসেন ফেরদৌস বার্তা২৪.কমকে বলেন, শিশুটি মানসিক সমস্যায় ভুগছে। মা-বাবার দাম্পত্য কলহের মধ্যে বেড়ে ওঠা শিশুদের মধ্যে এ ধরনের মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। স্বাস্থ্য বিভাগের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে আমরা বাড়িতে গিয়ে শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর উদ্যোগ নেই।

আল-হাশরের চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা মেডিকেল অফিসার ডা. সাজেদুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, হাসপাতালে প্রাথমিক পরীক্ষা নিরীক্ষার পর উন্নত চিকিৎসার ব্যাপারে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

বিজ্ঞাপন

উল্লেখ্য, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি নিউজ পোর্টাল বার্তা২৪.কমে বাঁশের খাঁচায় বেড়ে ওঠা শিশু আল-হাশরকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে সোমবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. সাজেদুল ইসলাম ও উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা নাইম হোসাইন সারিয়াকান্দি উপজেলার ভেলাবাড়ি ইউনিয়নের জোরগাছা গ্রামে শিশুটির বাড়িতে যান। কিন্তু পুরুষ অভিভাবক না থাকায় ওই দিন রাতে তাকে হাসপাতালে নেওয়া সম্ভব হয়নি।

জেরাগাছা গ্রামের সুজন ইসলাম ও ইতিমনি খাতুনের একমাত্র সন্তান আল-হাশর। বাবা-মা দুজনেই ঢাকায় পোশাক কারখানায় কর্মরত। বাবা-মার সাথে থাকা অবস্থায় শিশুটি মানসিক সমস্যায় ভুগতো। দেড় বছর আগে দাম্পত্য কলহের কারণে সুজন ইসলাম ও ইতিমনি ঢাকা থেকেই আলদাভাবে বসবাস শুরু করেন। তখন সুজন ইসলাম আল-হাশরকে গ্রামের বাড়িতে রেখে যায়।

সারিয়াকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তির পর আল-হাশরের দাদি খালেদা বেওয়া বার্তা২৪.কমকে বলেন, মা ইতিমনি সন্তানের কোনো খোঁজ খবর রাখে না। আমি তাকে মানুষ করছি। কিন্তু তাকে ছেড়ে দিয়ে রাখা যায় না। হাতের কাছে যা পায় তাই দিয়ে মাথায় আঘাত করে। অনেক চিকিৎসা করানো হয়েছে, কিন্তু কোনো ফল হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে বাঁশের খাচায় আটকে রাখতাম।