নেই বাণিজ্যিক চাষ, তবুও মৌ মৌ ঘ্রাণে ভরে ওঠে আঙিনা

  • কাজল সরকার, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, হবিগঞ্জ, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

নেই বাণিজ্যিক চাষ, তবুও মৌ মৌ ঘ্রাণে ভরে ওঠে আঙিনা। ছবি: বার্তা২৪.কম

নেই বাণিজ্যিক চাষ, তবুও মৌ মৌ ঘ্রাণে ভরে ওঠে আঙিনা। ছবি: বার্তা২৪.কম

ছয় ঋতুর দেশ বাংলাদেশ। তবে ছয় ঋতুর মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর হচ্ছে বসন্ত। বসন্তে গাছে গাছে ফুল আর কচি পাতায় ছেয়ে যায় চারপাশ। বসন্তের ছোঁয়া পেলেই প্রকৃতি সাজে তার আপন মহিমায়। শীতের শুষ্কতায় বিবর্ণ প্রকৃতি ফিরে পায় প্রাণ, দক্ষিণা হাওয়া মাতিয়ে তুলে চারিদিক। কৃষ্ণচূড়া, চন্দ্র মল্লিকা, গাঁদা, মালতি, মাধবী, বকুল, পলাশ, শিমুলসহ নানা ফুলে সুবাসিত হয়ে ওঠে বসুন্ধরা।

শিক্ষিত বা শহুরে জীবনে ক্যালেন্ডারের পাতা উল্টিয়ে হয়তো বসন্তের আগমন নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু গ্রামীণ জীবনে বসন্তের আগমন দেখতে ক্যালেন্ডারের প্রয়োজন পরে না। প্রকৃতির অবলীলায় গ্রামীণ মানুষজন উপলব্ধি করে ঋতুরাজ বসন্তকে। কারণ বসন্ত এলেই আম্র মুকুলের মৌ মৌ ঘ্রাণে ভরে ওঠে গ্রামের প্রতিটি আঙিনা। ডালে ডালে নতুন রূপে দেখা মেলে আমের মুকুলের।

বিজ্ঞাপন

হবিগঞ্জে এক সময় আমের বাণিজ্যিক চাষ হলেও এখন আর আগের মতো আম বাগান নেই। জেলার নবীগঞ্জ, বাহুবল ও বানিয়াচঙ্গে কয়েকটি আম বাগান থাকলেও সেগুলো থেকে উৎপাদিত আম জেলার বাইরে বিক্রি করা সম্ভব হয় না। বরং এ জেলায় আমের চাহিদা মেটাতে হয় বাইরে থেকে ক্রয় করে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Feb/20/1550660344152.jpg

বিজ্ঞাপন

তবে বাণিজ্যিক চাষ না হলেও প্রত্যেকটি গ্রামের কম বেশি আঙিনায় দু’একটা করে আম গাছ লক্ষ্য করা যায়। আর এসব গ্রামে গাছে গাছে এসেছে আমের মুকুল। চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে মুকুলের ঘ্রাণ। বাতাসে মুকুলের মৌ মৌ গন্ধ জানান দিচ্ছে মধুমাসের আগমনী বার্তার। এতে সবুজ পাতার মাঝে হলদে ফুলে আমের ভালো ফলনের স্বপ্ন দেখছেন সখের চাষিরা।

হবিগঞ্জের ৯টি উপজেলার মধ্যে বানিয়াচং, আজমিরীগঞ্জ, নবীগঞ্জ এবং বাহুবল উপজেলার গ্রামগুলোতে আম গাছ সব চেয়ে বেশি। এসব গ্রামে দেশীয় ল্যাংড়া, হিম সাগর, গোপালভোগ, ফজলি, আশ্বিনা, বোম্বাই, অগ্নি, অমৃত ভোগ, কৃষ্ণচূড়া, কালিভোগ, কাজল ফজলি, চম্পা, বাওয়ানী, দুধসর, বাদশা ভোগ, রাণী ভোগ, রাজ ভোগ, কালিভোগ, জিবাভোগের সঙ্গে রয়েছে বিদেশি আম্রপালি, মল্লিকা, চৌসা, তোতাপুরী, বোম্বাই গ্রিন ইত্যাদি আম গাছ।

স্থানীয়রা জানান, বিগত বছরের তুলনায় এ বছর আমের মুকুল বেশি এসেছে। ফলন ঠিক থাকলে পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বাজারে বিক্রি করা যাবে। যা থেকে অতিরিক্ত আয়ের উৎস খুঁজছেন অনেকে। আবার এভাবে প্রতি বছর আমের ফলন আসলে এবং সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে বাণিজ্যিকভাবে চাষ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন অনেকে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী মোহাম্মদ আলী জানান, বসন্ত এলেই আম গাছগুলোতে যৌবন ফিরে আসে। হবিগঞ্জে বাণিজ্যিক ভাবে চাষ না হলেও প্রতিটি গ্রামেই আমের মৌ মৌ ঘ্রাণ অনুভূত হয়। এবার আমের প্রত্যাশিত মুকুলের প্রধান কারণ আবহাওয়া অনুকূলে থাকা। এখন একটি বৃষ্টি হলে মুকুলের আরও উপকার হবে। মুকুল যাতে নষ্ট না হয় সেজন্য জেলা কৃষি অফিস সব সময় তাদের পাশে আছে।