পূর্ব শত্রুতায় নারীকে শিকলে বেঁধে নির্যাতন
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে রাণী বেগম নামে স্বামী পরিত্যক্ত এক মধ্যবয়সী নারীকে শিকলে বেঁধে মারধর ও নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, উপজেলার চন্ডিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল হোসেন ভূঁইয়া ও স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মিন্টুর নির্দেশে রাণীকে নির্যাতন করা হয়।
বুধবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে রাণী বেগমকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এর আগে মঙ্গলবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে উপজেলার ফতেহপুর গ্রামের একটি সুপারি বাগানে ওই নারীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে ওই নারীকে নির্যাতনের ছবিটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এতে বিভিন্ন মহল ক্ষোভ প্রকাশ করে।
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ নেতা মো. মিন্টু বলেন, ‘সভাপতি হিসেবে বাড়ি ও এলাকার সুবিধা-অসুবিধা দেখার দায়িত্ব আমার রয়েছে। রাণী নামের ওই নারী পাগল। দিনরাত শুধু মানুষকে গালাগাল করে। ঠাকুর বাড়ির সম্মানের কথা চিন্তা করে একটু শাসন করা হয়েছে। এতে দোষের কিছু হয়নি।’
স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার চন্ডিপুর ইউনিয়নের ফতেহপুর গ্রামের ঠাকুর বাড়ির মোহাম্মদ উল্যার মেয়ে রাণীকে গাছের সঙ্গে শিকল দিয়ে বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে একই বাড়ির শিরীন আক্তার এবং তার মেয়ে সুমি আক্তার লোকজন নিয়ে এ ঘটনা ঘটায়। চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে রাণী প্রাণে রক্ষা পায়। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার চেষ্টা করলে ইউপি চেয়ারম্যান কামাল হোসেন ও আওয়ামী লীগ নেতা মিন্টুর লোকজনের ভয়ে সম্ভব হয়নি। পরে বুধবার বেলা ১১টার দিকে তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। ওই ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতার নির্দেশেই রাণীকে মারধর করা হয়েছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
অভিযুক্ত সুমি আক্তার জানান, প্রায়ই রাণী বাড়ির সবাইকে গালমন্দ করে আসছে। এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে জানানো হয়। তিনি রাণীকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখার জন্য বলেছেন। এ কারণেই তাকে বেঁধে রাখা হয়েছিল।
জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করে চন্ডিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল হোসেন ভূঁইয়া জানান, তিনি বিষয়টি শুনেছেন। তবে বেঁধে রেখে মারধরের কথা তিনি জানেন না। এ ব্যাপারে কেউ তার কাছে অভিযোগ করেনি। ঘটনার সত্যতা জানতে ওই বাড়িতে যাবেন তিনি।
এ ব্যাপারে রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তোতা মিয়া বলেন, ‘বিষয়টি আমাকে কেউ জানায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’