চাষ ছাড়াই এক বাড়িতে অর্ধশতাধিক মৌচাক
মাদারীপুরের সদর উপজেলার দক্ষিণ খাকছাড়া এলাকার দুই তলা বিশিষ্ট একটি ভবনে কোনো প্রকার চাষ ছাড়াই গত ১০ বছরে প্রায় অর্ধশতাধিক মৌচাক নিয়ে বাসা বেঁধেছে মৌমাছি। ভবনটির কার্নিশ, বারান্দা ও দরজাসহ বিভিন্ন অংশে এসব মৌচাক ঝুলে রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে মৌমাছির বাসা থাকায় স্থানীয়রা বাড়িটির নাম দিয়েছেন ‘মৌচাক বাড়ি’।
এছাড়া বাড়িটির চারপাশে মৌমাছির আনাগোনা আর দৃষ্টিনন্দন এই দৃশ্য দেখার জন্য অনেকই ছুটে আসেন দূর-দূরান্ত থেকে।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার মস্তফাপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ খাকছাড়া গ্রামের কবির মল্লিকের দু’তলা ভবনের কার্নিশ, বারান্দার দেয়াল ও দরজার উপরের অংশসহ প্রায় সব জায়গায় ঝুলছে মৌচাক। এমনকি ভবনের আশেপাশে থাকা গাছগুলোর ডালেও মৌচাকের দেখা মেলে।
মৌচাক বাড়ির গৃহকর্তা কবির মল্লিকের তিন ছেলের দুজনই ইতালি প্রবাসী এবং একজন সরকারি চাকরিজীবী।
কবির মল্লিক বার্তা২৪.কমকে বলেন, `প্রায় এক যুগ আগে বাড়িটি তৈরি করার পর থেকেই মৌমাছি বাসা বাঁধতে শুরু করে। আস্তে আস্তে ভবনটির বিভিন্ন অংশে মৌচাকে ভরে যায়। আমার মৌমাছি দেখতে খুব ভাল লাগে। মৌমাছি আমাদের বাড়ির কাউকে কোনো ক্ষতি করে না।’
মৌচাক থেকে মধু সংগ্রহ করা হয় কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, `আমি কারও কাছে মধু বিক্রি করি না। কেউ মৌমাছির চাকে ইটও ছোঁড়ে না। বরং সবাই মৌচাকগুলো দেখাশুনা করে রাখে। নিজেদের প্রয়োজন হলে বছরে দুই একটা চাক থেকে মধু সংগ্রহ করি। সেখান থেকেই প্রতিবেশি ও আত্মীয় স্বজনদেরকেও মধু দেই।‘
এলাকার মিরাজুল ইসলাম বলেন, `ভবনটিতে সব সময় মৌচাক থাকায় বিভিন্ন জায়গা থেকে দর্শনাথীরা এই দৃশ্য দেখতে আসে। যখন মৌচাক থেকে মধু সংগ্রহ করা হয় তখন খাঁটি মধু আমরা খেতে পারি।’
বাড়িটি দেখতে আসা দর্শনার্থী আরিফ বলেন, `মৌচাকবাড়িটির নাম আগেই শুনেছি। তাই নিজের চোখে দেখার জন্য এখানে এসেছি। বাড়িটির চারদিকে মৌচাকগুলো দেখতে খুব সুন্দর লাগছে। মনে হচ্ছে মৌমাছির রাজ্যে এসেছি।’
স্থানীয়রা জানান, ২০ থেকে ২৫ বছর পূর্বে বেশিরভাগ বাড়িতেই মৌচাক দেখা যেত। কিন্তু বর্তমানে ইটভাটার কারণে দিনদিন মৌমাছি আর মৌচাক কমে যাচ্ছে। এই মল্লিকবাড়ির মৌচাকের দৃশ্যটি ছাড়া পরিবেশের ভারসাম্যহীনতার কারণে এলাকায় এখন আর তেমন মৌমাছির বাসা চোখে পড়ে না। পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে পারলে মৌচাকের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।