পানিতে ভাসছে কৃষকের স্বপ্ন
অসময়ের টানা তিনদিনের বৃষ্টিতে জমিতে পানি জমেছে। এতে রাজবাড়ীর পাঁচটি উপজেলায় পেঁয়াজ, রসুন, গম আর মসুর ডালের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। যেন পানিতে ভাসছে কৃষকের স্বপ্ন।
জানা গেছে, রাজবাড়ী সদর, পাংশা, বালিয়াকান্দি, কালুখালী, গোয়ালন্দে কিছুদিন আগেও ফসলের সবুজ ক্ষেত দেখে চোখ জুড়িয়ে যেত যে কারো। অথচ হঠাৎ করে টানা তিনদিনের বৃষ্টিতে জমিতে পানি জমে গেছে। এতে পেঁয়াজ, রসুন, গম আর মসুর ডালের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। যে ফসলকে ঘিরে কৃষকের চোখে ছিল স্বপ্ন, আজ তা ভেঙে এখন তারা দিশেহারা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মাঠের পর মাঠ শুধু পেঁয়াজ, রসুন, গম আর মসুর ডালের ক্ষেত। এসব ক্ষেত বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে। আর ক্ষেত থেকে পানি সরানোর জন্য কৃষকরা এক সঙ্গে ১৫টি ইঞ্জিনচালিত শ্যালো মেশিন দিয়ে দিন-রাত আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কেউবা আবার পানি নিষ্কাশনের জন্য ক্ষেত থেকে লাইন কেটে পাশের খালের সঙ্গে মিশিয়ে দিচ্ছে।
কৃষকদের অভিযোগ, মাঠের মাঝখান দিয়ে প্রবাহিত খালে অপরিকল্পিতভাবে বাঁধ নির্মাণের ফলে খালের পানিই ফিরে আসছে তাদের আবাদি জমিতে।
পাইককান্দি গ্রামের কৃষক আব্দুল মালেক বার্তা২৪.কমকে জানান, এবারের অকাল বৃষ্টিতে তাদের উৎপাদিত ফসলের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষেতের মধ্যে হাঁটু পানি জমে থাকায় পেঁয়াজ, রসুন এবং গমের গোড়ায় পচন দেখা দিয়েছে। এ পর্যন্ত তাদের প্রায় ৬০ শতাংশ ফসলের ক্ষতি হয়েছে। এখন শেষ চেষ্টা চালাচ্ছে বাকি ফসলগুলো যাতে তারা ঘরে তুলতে পারে।
ফুলবাড়িয়া গ্রামের কৃষক গেন্দু শেখ জানান, তারা আজ দুদিন ধরে মাঠের পানি সরানোর জন্য ১৫টি মেশিন ব্যবহার করছে। এরপরেও পানি কমছে না। এ সময় তিনি মাঠের পানি নিষ্কাশনের জন্য পরিকল্পিত ভাবে ড্রেনেজ ব্যবস্থা করা এবং কৃষিখাতে ভর্তুকি দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে আহ্বান জানান।
সদর ইউপি চেয়ারম্যান মো. নায়েব আলী শেখ বার্তা২৪.কমকে জানান, বৃষ্টির পানিতে কৃষকের যে ক্ষতি হয়েছে তা খুবই হতাশাজনক। কারণ এ অঞ্চলের কৃষকদের একমাত্র ফসল হলো পেঁয়াজ, রসুন, গম আর ধান। এ ফসলগুলোর উপর নির্ভর করেই তারা বেঁচে থাকে।
রাজবাড়ী উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া কৃষকের পাশে আমরা রয়েছি। কৃষকদের সকল ধরনের সহযোগিতা এবং পরবর্তী পরামর্শ দেওয়া হবে।’