ধর্ষকের হুমকিতে কন্যাকে নিয়ে ভিটে ছাড়া পিতা
ধর্ষণে পর অন্তঃসত্ত্বা! তাই গর্ভের সন্তান সুকৌশলে নষ্ট করে ধর্ষকসহ তার পরিবার। কিন্তু বিচার চাইতে গেলে ধর্ষকের পরিবারের হুমকিতে ভিটে ছাড়া ধর্ষিতা ও তার পিতা। অসহায় পিতা কন্যাকে নিয়ে বিচারের আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কোনো উপায় না পেয়ে দ্বারস্থ হয়েছেন সংবাদকর্মীদের।
সোমবার (১১ মার্চ) দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে অসহায় পিতা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও মানবাধিকার সংস্থার সহযোগিতা কামনা করেছেন। ধর্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান যশোর জেলার সাগরদাড়ি এলাকার গোবিন্দপুর গ্রামের আবুল হোসেন খার ছেলে আব্দুল আলিম।
এ সময় তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘আমি একজন অসহায় সহায় সম্বলহীন কৃষক। অন্যের জমি ভাগে (বর্গা) নিয়ে চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করি। আমার দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। আমার স্ত্রী দুই সন্তান রেখে গত ৪ বছর পূর্বে সংসার ছেড়ে চলে যায়। এরপর থেকে আমি ওই দুই সন্তান নিয়ে বসবাস করি। আর্থিক অনটনের কারণে বড় কন্যার পড়াশোনা বন্ধ করে দেই। আমি কাজের জন্য মাঠে গেলে বড় কন্যা ঘরের কাজকর্ম করতো। কাজকর্ম শেষে পাশ্ববর্তী আমার চাচাতো ভাই মাজিদ খাঁর বাড়িতে যেয়ে টিভি দেখতো। ওই চাচাতো ভাইয়ের বড় ছেলে আলমগীর হোসেন বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে আমার মেয়েকে জোরপূর্বক পর পর দুইবার ধর্ষণ করে। আমার কন্যা বিষয়টি ওই লম্পটের মাতা আকলিমা খাতুনকে জানালে আকলিমা (চাচাতো ভাইয়ের স্ত্রী) আমার কন্যাকে বলে, এ বয়সে এরকম একটু হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আলমগীর কর্তৃক ধর্ষিত হয়ে আমার কন্যা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। কিন্তু আমার কন্যার মা না থাকায় লজ্জায় সে আমাকে জানায়নি। ওই বিষয়ে আলমগীরের মা আকলিমাকে জানায়। ২২ ফেব্রুযারি আকলিমা আমার কন্যাকে বেড়ানোর নাম করে কেশবপুর এলাকার একটি ক্লিনিকে নিয়ে পানির সাথে ঔষধ খাইয়ে দেয়। এর কিছুক্ষণ পর ভ্রুনটি নষ্ট হয়ে যায়। এলাকাবাসীর কাছে বিষয়টি প্রচার করে তারা। তখন বিষয়টি জানতে চাইলে আমার কন্যা বিস্তারিত বলে।’
আব্দুল আলিম বলেন, ‘আমি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন মহলকে অবহিত করি। এরপর আলমগীরের বড় চাচা রেজাউল খাঁ আমাকে বিষয়টি থানা পুলিশ না করার অনুরোধ জানিয়ে বলে, আমি বিষয়টির সমাধান করে দেব। কিন্তু তারা রেজাউল খাঁর কথামতো সমাধানে রাজি না হয়ে আমার ও আমার কন্যাকে খুন করার হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে।’
আকুতি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি এখন এই মা হারা কন্যাকে নিয়ে কোথায় যাবো? কার কাছে যাবো, কোথায় গেলে এর সঠিক বিচার পাবো? আমি আলমগীর ও তার মা আকলিমার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে যশোর পুলিশ সুপার মহোদয়সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’