সয়াবিনের ফুলে কৃষকের মুখে হাসি
উপকূলীয় জেলা লক্ষ্মীপুরের অন্যতম একটি অর্থকরী ফসল সয়াবিন। এটি এখন লক্ষ্মীপুরের কৃষকদের স্বপ্নের ফসলে পরিণত হয়েছে। এ স্বপ্ন বুনে অনেকেই সফলতা অর্জন করেছেন। নিঃস্ব থেকে হয়েছেন লাখোপতি। কম খরচে অধিক লাভ হওয়ায় এখানকার কৃষকরা সয়াবিন চাষে বেশি আগ্রহী। প্রায় ১ মাস আগে জমিতে তারা স্বপ্নের সয়াবিন বুনেছেন। আর সেই স্বপ্নে এবার এসেছে ফুল। কিছুদিন পরই ফুলগুলো পরিপক্ক হয়ে সয়াবিনে রূপান্তরিত হবে। এখানকার কৃষকদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের সঙ্গী সয়াবিন।
বুধবার (১৩ মার্চ) বিকেলে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার শাকচর গ্রামে সয়াবিন গাছে ফুল দেখা গেছে। মাঘ মাসের শেষের দিকে এখানে সয়াবিনের আবাদ শুরু হয়েছে। এর মধ্যেই গাছে ফুল দেখে বেজায় খুশি চাষীরা। এদিকে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সয়াবিনের বাম্পার ফলন হবে বলে জানিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর।
জানা গেছে, সয়াবিন চীনের স্থানীয় উদ্ভিদ। ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশে এর চাষাবাদ শুরু হয়। বিশেষ করে লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী ও ফেনী জেলার সয়াবিন চাষ করা হয়। বাংলাদেশে চাষাবাদের ১০ বছরের মধ্যেই ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায় সয়াবিন চাষ। কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় এ জেলার কৃষকরা সয়াবিন চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেন। এর মধ্যে দেশের উৎপাদিত সয়াবিনের মধ্যে লক্ষ্মীপুরে প্রায় ৭৫ শতাংশ উৎপাদন হয়।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানায়, চলতি মৌসুমে লক্ষ্মীপুরে ৪৫ হাজার ৪৯০ হেক্টর জমিতে সয়াবিন আবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলায় ৬ হাজর ৫৬০ হেক্টর, রায়পুরে ৬ হাজার ১৫০ হেক্টর, রামগঞ্জে ৮৫ হেক্টর, রামগতি ১৮ হাজার ১৯০ হেক্টর ও কমলনগর উপজেলায় ১৪ হাজার ৫৫০ হেক্টর। বীজ রোপনের ৯৫ থেকে ১১৫ দিনের মধ্যে ফসল সংগ্রহ করা যায়। হেক্টর প্রতি ১.৫ থেকে ২.৫ টন সয়াবিন উৎপাদন হয়ে থাকে। গাছ ৩০ থেকে ৯০ সেন্টিমিটার উঁচু হয়। সয়াবিন অত্যন্ত পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ। এটি ভোজ্য তেলের প্রধান উৎস।
শাকচর গ্রামের সয়াবিন চাষী রুহুল আমিন জানান, মাঘ মাসের শেষের দিকে জমিতে সয়াবিনের বীজ বুনেছি। এখন ফুল আসছে গাছে। আবহাওয়া ভালো থাকলে বাম্পার ফলন হবে। কিছুদিন পরই গাছে সয়াবিন ধরবে। বৈশাখ মাসের মধ্যেই ফসল ঘরে তুলতে পারবো।
লক্ষ্মীপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. বেলাল হোসেন খান বলেন, এখানকার মাটি বেশ উর্বর। রবি ফসল উৎপাদনের সহায়ক। এ জেলায় রবি মৌসুমে সবচেয়ে বেশি সয়াবিনের চাষাবাদ হয়। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এখানে সয়াবিন উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করবে।