হারিয়ে যাচ্ছে গরু-মহিষের গাড়ি
একটা সময় ছিল চুয়াডাঙ্গার গ্রামগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী বাহন ছিল গরু বা মহিষের গাড়ি। সময়ের পরিক্রমায় দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে গরুর গাড়ি ও গাড়িয়াল পেশা। সময়ের ব্যবধানে এখন এই গরুর গাড়ির স্থান পেয়েছে সংবাদপত্র ও বইয়ের পাতায়। কিন্তু চুয়াডাঙ্গার চারটি উপজেলার কিছু কিছু গ্রামে এখনোও দেখা মেলে গরু আর মহিষের গাড়ি। এসব গরুর গাড়ি যারা চালায় তাদের বলা হয় গাড়িয়াল।
গ্রামবাংলার জনপদে কৃষি ফসল ও মানুষ পরিবহনের প্রিয় বাহন দুই-চাকার গরুর গাড়ি থাকলেও আধুনিকতার যান্ত্রিক ছোঁয়া আর ডিজিটাল পদ্ধতির কাছে হার মেনে বিলুপ্তপ্রায় এ পেশাটি। গরুর গাড়ি নিয়ে লেখকরা লিখেছেন তাদের ভাষায় কত না কবিতা, শিল্পীরা এঁকেছেন কতই না ছবি। তবে গ্রামগঞ্জের সংস্কৃতির সেই গরুর গাড়ি এখন খুঁজে পাওয়াই কষ্ট।
নিকট অতীতে মানুষ যাতায়াতের জন্য গরুর গাড়ি ব্যবহার করলেও আধুনিক সভ্যতায় বিভিন্ন যন্ত্রের যানবাহন আবিষ্কৃত হওয়ায় আজ আর গরুর গাড়ির দেখা মেলে না। একটা সময় কৃষি কাজে গরু দিয়ে হাল-চাষ করা হতো। কিন্তু এখন আধুনিক যন্ত্রপাতিতে গরুর গাড়ির প্রয়োজন হয় না। সেই কারণে শহরের ছেলেমেয়েরা দূরের কথা, বর্তমানে গ্রামের ছেলে-মেয়েরাও গরুর গাড়ির শব্দটির সঙ্গে পরিচিত নয়।
সদর উপজেলার গাড়াবাড়িয়া গ্রামের মণ্ডল হানিফ মিয়া বলেন, ‘বর্তমান যুগ হচ্ছে যান্ত্রিক যুগ। মানুষ বিভিন্ন ধরনের প্রয়োজনীয় মালামাল বহনের জন্য বাহন হিসেবে ব্যবহার করছে ট্রাক, পাওয়ার টিলার ও লরিসহ বিভিন্ন মালগাড়ি। মানুষের যাতায়াতের জন্য রয়েছে মোটরগাড়ি, রেলগাড়ি, অটোরিকশা ইত্যাদি। ফলে গ্রামেও এখন আর চোখে পড়ে না গরুর গাড়ি।’
চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদার জুড়ানপুর গ্রামের কৃষক আনারুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের বাপ-দাদারা গরুর গাড়ি চালিয়ে সংসার চালাতেন। কিন্তু এখন গরুর গাড়িতে আর কেউ চড়তে চাই না। তাই অটো ভ্যান ও ইজিবাইক চালিয়ে গ্রামের কিছু কিছু গাড়িয়ালরা তাদের জীবিকা নির্বাহ করেন। যান্ত্রিক সভ্যতার যুগে আস্তে আস্তে গরুর গাড়ি বিলীন হয়ে যাচ্ছে।