তামাকের গন্ধে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে শিশুরা
বিষবৃক্ষ তামাকের গন্ধ ও ধোঁয়ায় স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে রাজবাড়ীর পাংশা, বালিয়াকান্দি, কালুখালী, গোয়ালন্দ ও সদরসহ ৫টি উপজেলার শিশুরা। মাঠ থেকে তামাক সংগ্রহ করে সেটিকে বাজারজাতকরণের ক্ষেত্রে সরাসরি পুরুষের পাশাপাশি এ অঞ্চলের নারী ও শিশুরা কাজ করছে। ফলে দিন দিন নানা ধরনের অজানা রোগের শিকার হচ্ছে তারা।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছে, এভাবে সরাসরি তামাক প্রক্রিয়াজাতকরণের সঙ্গে শিশুরা শ্রম দিলে তারা মারাত্মক জটিল রোগে আক্রান্ত হতে পারে।
অল্প খরচে বেশি লাভের আশায় এ অঞ্চলের কৃষকরা তামাক চাষের দিকে ঝুঁকছে। মাঠের পর মাঠ শুধু তামাক আর তামাক। বিষবৃক্ষ তামাক চাষের ফলে যেমন ক্ষতি হচ্ছে আবাদি কৃষি জমির, তেমনি স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে এ অঞ্চলের কৃষকরা।
সংশ্লিষ্ট কৃষি অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছে, তামাক চাষবিরোধী কোনো আইন না থাকায় তারা কোনো পদক্ষেপ নিতে পারছে না। তবে তামাক চাষের ভয়াবহতার চিত্র তুলে ধরে তারা নিয়মিত কৃষকদের সঙ্গে উঠান বৈঠক করছেন। পাশাপাশি তামাক চাষ না করার জন্য নিরুৎসাহিত করছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সদর উপজেলার জৌকুড়া ঘাট এলাকার নারী শ্রমিক বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আমরা সাধারণত বাড়ির কাজ সম্পূর্ণ করে অবসর সময়ে তামাক সংগ্রহের কাজ করে থাকি। তবে যখন তামাকের পাতাগুলো বাছাই করে গাঁথি তখন এর গন্ধ আমাদের খুব খারাপ লাগে। নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু কী করব? টাকার জন্য আমরা অনেক কষ্ট শিকার করে এ কাজ করি।’
বালিয়াকান্দি সদর ইউনিয়নের কৃষক মো. জাকির হোসেন বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আমরা জানি তামাক চাষের ফলে আমাদের জমির মাটির উর্বরতা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তামাক পোড়ানোর সময় যে ধোঁয়া বের হয় তা মারাত্মক ভাবে আমাদের স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে। আমরা জেনেশুনেও একটু বেশি লাভের আশায় তামাক চাষ করে থাকি।’
বালিয়াকান্দির ৫০ শয্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডা. এস এম আব্দুল্লাহ আল মুরাদ বার্তা২৪.কমকে জানান, তামাকের গন্ধ ও ধোঁয়া মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। আর সেক্ষেত্রে নারী ও শিশুরাতো আরও বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। কারণ তামাকের ধোঁয়ায় যে নিকোটিন বের হয় তা সবার জন্যই ক্ষতিকর।
তিনি আরও জানান, সাধারণত নারী ও শিশুদের ওজন অনেকটা কম থাকে। তাই পুরুষের থেকে এরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং দীর্ঘদিন ধরে এ কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকলে তারা বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত হতে পারে।