ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান
রাজধানী ঢাকার অদূরে নবাবগঞ্জ উপজেলার কৈলাইল ইউনিয়নের ৪৬ নং তেলেঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি ভবনে ফাটল ধরেছে, পলেস্তারা খসে পড়ছে। আর এই ঝুঁকি নিয়েই ভবনটিতে চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান। এছাড়া শিক্ষক সংকটেও বিদ্যালয়টিতে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।
বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ সূত্রে জানা যায়, ১৯৭০ সালে তেলেঙ্গা গ্রামে ৪৬ নং তেলেঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয় এবং পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ সরকার বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ করে। টিনকাঠের শ্রেণিকক্ষে চলতো পাঠদান।
বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে দুইটি ভবনে পাঁচটি কক্ষ নিয়ে চলছে শিক্ষাদান। এতে প্রাক-প্রাথমিকসহ তিনটি শ্রেণিকক্ষ রয়েছে। একটি কক্ষে অফিস ও একটি জরাজীর্ণ পরিত্যক্ত কক্ষ রয়েছে।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৩ সালে তিন কক্ষ বিশিষ্ট একটি পাকা ভবন নির্মিত হয়। পরে ২০০৯ সালে নির্মিত দুই কক্ষ বিশিষ্ট আরও একটি পাকা ভবন নিয়ে বিদ্যালয়টি চলছে। এর মধ্যে তিন কক্ষ বিশিষ্ট পাকা ভবনটির ভীম ও কলামে ফাটল ধরেছে। দেয়াল থেকে পলেস্তারা খসে খসে পড়ছে। কয়েকটি স্থানে দেখা দিয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ ফাটল। শ্রেণিকক্ষ সংকটে শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়েই এই ভবনে পাঠ নিচ্ছে।
তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী সালমা জানায়, মাথার ওপরে ফাটল। তাই ছাদের ভীমের ফাঁক দেখে বেঞ্চ বসানো হয়েছে। যাতে পলেস্তারা ভেঙে শরীরে না পড়ে।
একই শ্রেণীর সুফিয়ান বলেন, ‘শ্রেণিকক্ষের সংকট, তাই ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করছি।’
প্রধান শিক্ষক মরিয়ম আক্তার বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘ভবন সংকট, তাই ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও অফিস কক্ষ থেকে সরে যেতে পারিনি। তার উপর রয়েছে শিক্ষক সংকট। শিক্ষক বলতে আমি আর প্রাক-প্রাথমিকের অপরাজিতা চৌধুরী। সেও রয়েছে মাতৃত্বকালীন ছুটিতে।’
তিনি বলেন, ‘উপজেলা শিক্ষা অফিস খুরশিদা বেগম নামে এক শিক্ষককে অস্থায়ী নিয়োগ দিলেও সংকট কাটেনি। তাই এলাকার দুই জন শিক্ষিত নারী দিয়ে পাঠদান করাতে বাধ্য হচ্ছি।‘
বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সহ-সভাপতি আক্তার হোসেন বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘এ অবস্থা গত কয়েক বছর ধরে চলছে। পরিবেশ ভালো না থাকায় শিক্ষার্থীরা পার্শ্ববর্তী মাদ্রাসায় চলে যাচ্ছে। আমি সহ-সভাপতি হওয়ার পর উপজেলা শিক্ষা অফিসে তাগিদ দিচ্ছিলাম।’
এ বিষয়ে নবাবগঞ্জ উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আহসান বলেন, ‘জরুরি ভিত্তিতে একজন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে ক্লাস নেওয়া বন্ধ করা হবে। আমরা এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। উপজেলা প্রকৌশলী অফিস ভবন পরীক্ষা করবে। ঝুঁকিপূর্ণ হলে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হবে।’