মহাসড়কের উপর পাথর, ঘটছে দুর্ঘটনা
সড়ক দুর্ঘটনা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সড়ক-মহাসড়কে দুর্ঘটনার জন্য সব সময় চালকদের দায়ী করা হয়। কিন্তু এর জন্য অনেক সময় সাধারণ মানুষ অথবা তৃতীয় পক্ষও দায়ী থাকে। সড়ক মহাসড়কের স্থানে স্থানে মাটি, বালু ও পাথরসহ বিভিন্ন জিনিস রেখে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে ব্যবসায়ীসহ প্রভাবশালীরা। এতে প্রায়ই ঘটে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে এভাবেই মাটি, বালু ও পাথর রেখে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে দেখা যায়। এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীরা এই অপকর্ম করে থাকেন। অথচ তাদের এই খামখেয়ালিপনার কারণে প্রাণ দিতে হয় সাধারণ মানুষকে।
জানা গেছে, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের প্রায় ৮০ কিলোমিটার পড়েছে হবিগঞ্জ অংশে। এর মধ্যে অন্তত ১৫-২০টি স্থানে মাটি, বালু, পাথর অথবা বিভিন্ন জিনিসপত্র রেখে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়েছে। যেখানে প্রতিদিন ঘটছে দুর্ঘটনা। বিশেষ করে বালু ও পাথর রেখে সবচেয়ে বেশি প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, হবিগঞ্জে মাধবপুর বাজারে মহাসড়কের পাশে দীর্ঘদিন ধরে পাথর রেখে ব্যবসা করে আসছে একটি প্রভাবশালী মহল। প্রতিদিন সেখানে তারা ট্রাক দিয়ে পাথর লোড-আনলোড করে আসছে। একালাবাসী প্রতিবাদ করে এর কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না। অসাধু পাথর ব্যবসায়ীরা এক সময় মহাসড়কের পাশে পাথর রেখে ব্যবসা করলেও এখন তারা সড়কের অনেক অংশ দখল করে নিয়েছে। ফলে প্রায় সময়ই ওই স্থানে ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটে থাকে।
এ ব্যাপারে মাধবপুর বাজারের ব্যবসায়ী মো. এরশাদ আলী জানান, দীর্ঘদিন ধরে মহাসড়কের উপর পাথর রেখে ব্যবসা করে আসছে একটি অসাধু চক্র। ফলে এখানে প্রায় সময়ই দুর্ঘটনা ঘটে। বাজারের ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে বার বার প্রতিবাদ করলেও কোনো কাজ হয়নি।
তিনি জানান, শুধু ব্যবসায়ীরা নয়, পৌরসভার কন্টাকটারেরাও মহাসড়কের উপর পাথর রেখে কাজ করাচ্ছেন। এছাড়া কয়েকজন মার্কেট মালিকও এমনটাই করছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অন্য এক ব্যবসায়ী জানান, প্রশাসনের লোকজনও কোনো ব্যবস্থা নেয় না। বিভিন্নভাবে প্রশাসনের লোকজনকে ম্যানেজ করে নিয়েছে পাথর ব্যবসায়ীরা।
খোঁজ নিয়ে আরও জানা যায়, মাধবপুর পৌরসভার অধীনে বেশ কয়েকটি উন্নয়ন কাজ চলছে। ওই কাজের জন্য আনা পাথরও রাখা হয়েছে মহাসড়কের উপরে। সেখান থেকে লোড-আনলোড করে বিভিন্ন স্থানে নেয়া হচ্ছে। পৌরসভার লোকজনের এমন কর্মকাণ্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ভুক্তভোগীরা।
এ ব্যাপারে পৌরসভার ওয়াটার প্ল্যান্ট কাজে নিয়োজিত ‘এ.বি ওয়াটার কোম্পানি’র ইঞ্জিনিয়ার ফজলে রাব্বি বলেন, ‘আমরা এখানে কোনো পাথর রাখি না। আমাদের কাজের জন্য আনা পাথর মহাসড়কের পাশে আনলোড করে সঙ্গে সঙ্গে অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়।’
এতে কী মহাসড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে না? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘হচ্ছে, কিন্তু অন্য কোথাও জায়গা না থাকায় আমরা এ কাজ করছি। আর করব না।’
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মল্লিকা দে বলেন, ‘আজ (২৩ মার্চ) বিকেলে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে পাথরগুলো জব্দ করে এসেছি। সেখানে কাউকে না পাওয়ার কারণে জরিমানা করতে পারিনি। তবে আর যেন কেউ মহাসড়কের উপর পাথর না রাখতে পারে সে জন্য প্রশাসনের নজরদারি থাকবে।’