স্বপ্ন একটি স্থায়ী দোকানের

  • হাসান মাহমুদ শাকিল, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, লক্ষ্মীপুর, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

কামাল হোসেন। ছবি: বার্তা২৪.কম

কামাল হোসেন। ছবি: বার্তা২৪.কম

ফল বিক্রেতা মো. কামাল হোসেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। এখন তার বয়স ৪৮ বছর। এর মধ্যে ২৯ বছর ধরেই ফল বিক্রি করছেন। ১২শ টাকায় শুরু করে তার মূলধন এখন ৬০ হাজার টাকায় দাঁড়িয়েছে। তবে ভ্রাম্যমাণ নয়, একটি স্থায়ী দোকানের স্বপ্ন তার।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) রাত ৯টার দিকে লক্ষ্মীপুর শহরের চকবাজার এলাকায় সড়কের পাশে ভ্যানে সাজানো বিভিন্ন ধরনের ফল নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন কামাল। তার ভ্যানে আঙুর, কালো আঙুর, কমলা, আপেল ও মাল্টা ফল সাজানো দেখা যায়।

বিজ্ঞাপন

এ সময় তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চকবাজার এলাকায় ফল বিক্রি করেন তিনি। সময় বাঁচানোর জন্য দুপুরে খেতে বাড়িতে যান না। দুপুরের খাবার হোটেলেই খান।

কামাল লক্ষ্মীপুর পৌরসভার মধ্যবাঞ্চানগর এলাকার নুরুল ইসলাম ভূঁইয়ার ছেলে।

বিজ্ঞাপন

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Mar/29/1553856977946.jpg

জানা গেছে, কর্ম জীবনের শুরুতে কামাল কয়েক বছর যাত্রীবাহী পিকআপের চালক ছিলেন। কিন্তু মাঝে মাঝে যাত্রীদের খারাপ আচরণের কারণে কাজ ছেড়ে দেন। এরপর মাত্র ১২শ টাকা মূলধন নিয়ে শুরু করেন ফলের ব্যবসা। তার ঘরে স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।

কামাল জানান, প্রথম ১০ বছর টুকরি ভর্তি ফল নিয়ে বাজারের বিভিন্ন স্থানে সড়কের পাশে বসে বিক্রি করতেন। এরপর তিনি ফল বিক্রির জন্য একটি ভ্যানগাড়ি কেনেন। গত ১৯ বছর ধরে তার ব্যবসার বাহন হচ্ছে ভ্যানগাড়ি। এখন তার ব্যবসার মূলধন ৬০ হাজার টাকায় এসে দাঁড়িয়েছে। মাঝে মাঝে দিনে ১০ হাজার টাকার মতো ফল বিক্রি হয় তার।

জানতে চাইলে মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘শুরু থেকে ব্যবসাটিকে এই পর্যন্ত টেনে আনতে অনেক কষ্ট করেছি। এখন আর তেমন কষ্ট হয় না। তবে কম পুঁজি দিয়ে ব্যবসা শুরু করলেও এখন মূলধন বেড়েছে। শুধুমাত্র মেয়ের বিয়ের সময় একটি ঋণ নিয়েছি। সেটিও পরিশোধের প্রায় শেষ পর্যায়ে। একমাত্র ছেলে পড়ালেখা করছে। আল্লাহর রহমতে, আমার সংসারে এখন আর কোনো দুঃখ কষ্ট নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখন একটি স্থায়ী দোকান দেয়ার স্বপ্ন রয়েছে। কারণ বিভিন্ন সময় পৌরসভা থেকে এসে তাড়িয়ে দেয়। এতে ফল বিক্রি করতে না পারায় পচে গিয়ে অনেক টাকা ক্ষতি হয়। একটি দোকান ভাড়া নিতে গেলেও অনেক টাকা অগ্রিম দিতে হয়। কিন্তু ওই পরিমাণ টাকা আমার কাছে নেই।’