৪ ঘণ্টার বৃষ্টিতে বাঁচল ১০ হাজার কৃষক!
বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ হলেও দিন দিন কমে আসছে নদীর সংখ্যা। অনেক স্থানে এখন নদী খুঁজে পাওয়াই দায়। নদ-নদী কমে যাওয়ার কারণে কমে আসছে পানির উৎসও। ফলে পানি সংকটে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে চাষাবাদ। বিশেষ করে আমন জমিতে এক সময় বোরো চাষ হলেও এখন আর তা সম্ভব হয় না।
অনেক অনিশ্চয়তার মাঝেও চলতি বোরো মৌসুমে হবিগঞ্জে চাষ অযোগ্য সাড়ে ৫ হাজার হেক্টর আমন জমিতে বোরো চাষ হয়। কিন্তু যখন জমিতে (ফাল্গুন মাসের শেষ দিকে) ধান আসার কথা তখনই সেচের অভাব দেখা দেয়। জমি ফেটে চৌচির হয়ে যায়। পানির অভাব দেখা দেয়ায় নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়ে পড়ে জেলার মাধবপুর ও চুনারুঘাট উপজেলার সাড়ে ৫ হাজার হেক্টর বোরো ধান। মাথায় হাত পড়ে দুই উপজেলার প্রায় ১০ হাজার কৃষকের।
জমির অবস্থা দেখে কৃষকরা যখন দিশেহারা, তখন আশার আলো জাগিয়েছে মাত্র ৪ ঘণ্টার বৃষ্টি। ৩১ মার্চ সন্ধ্যায় হবিগঞ্জে বৃষ্টি শুরু হয়। একটানা ৪ ঘণ্টার বর্ষণে কৃষকের মনে রঙিন স্বপ্নের অঙ্কুর জন্ম নেয়। বৃষ্টির পরশে ফেটে চৌচির হয়ে যাওয়া মাটিতে ফিরে প্রাণ, সতেজতা ছড়ায় ধানের গাছে।
চুনারুঘাটের কৃষক মতিন মিয়া বলেন, ‘আমি প্রায় ৮ কের (১ কের সমান ৩২ শতক) জায়গায় বোরো আবাদ করেছি। পানির অভাবে ওই জমি থেকে ধান পাওয়ার আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু ৩১ মার্চের বৃষ্টিতে জমির অনেক ভালো হয়েছে। এখন আর বৃষ্টি না হলেও চলবে।’
একই উপজেলার কৃষক মোতালিব হোসেন বলেন, ‘পানির অভাবে আমনের জমিগুলোতে বোরো চাষ করা সম্ভব হয় না। তারপরও এ বছর ৫ কের জায়গায় চাষ করেছিলাম। কিন্তু পানির অভাবে জমির মাটি ফেটে চৌচির হয়ে গিয়েছিল। তবে বৃষ্টিতে জমিগুলোর অনেক ভালো হয়েছে।’
হবিগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহা-পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ আলী জানান, সেচ সংকটে আমন জমিতে বোরো আবাদে কৃষকরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল। কিন্তু জেলা কৃষি অফিস থেকে বোরো চাষে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছিল। এরই ধারাবাহিকতায় জেলায় মোট সাড়ে ৫ হাজার হেক্টর আমন জমিতে বোরো চাষাবাদ করা হয়েছে। কিন্তু সেচের অভাবে জমিগুলো নষ্ট হওয়ার পথে ছিল। ৩১ মার্চের বৃষ্টিতে হবিগঞ্জে সাড়ে ৫ হাজার হেক্টর জমির ফসলের জন্য উপকার হয়েছে। আর বৃষ্টি না হলে অন্তত ১০ হাজার কৃষকের মাথায় হাত পড়ত।