গয়না নয়, তাবিজ তৈরিতে ঝুঁকছে কারিগররা
এক সময় ইমিটেশন শিল্পের জন্য বিখ্যাত ছিল গোপালগঞ্জের জলিরপাড়। হাজার হাজার নারী-পুরুষ ইমিটেশনের গয়না তৈরির কাজ করে স্বাবলম্বী ছিল। কিন্তু উন্নত মেশিন আর মানসম্পন্ন মেডিসিনের অভাবে বিদেশি গয়নার সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ায় এ শিল্প এখন বিলুপ্তির পথে। নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে ও চাহিদা থাকায় এখন ইমিটেশনের গয়না ছেড়ে তাবিজ তৈরিতে ঝুঁকছে কারিগররা।
জানা গেছে, কারিগররা ঢাকার জিনজিরা থেকে তাবিজ তৈরির কাঁচামাল তামা, দস্তা, ব্রোঞ্জ কেজি প্রতি ৫০০-৭০০ টাকায় কিনে আনেন। পরে সাইজ মতো কেটে আগুনে পোড়ানো হয়। এরপর বিভিন্ন কৌশলে নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় তৈরি হয় তাবিজ। সবশেষে মেডিসিন দিয়ে কালার করা হয়।
এখানের তৈরিকৃত তাবিজ ঢাকা, খুলনা, বগুড়া, বরিশাল, বরগুনা, রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কেজি প্রতি ৮০০ থেকে ১০০০ টাকায় বিক্রি করা হয়। এ শিল্পে লাভ কম হলেও চাহিদা বেশি। তাই এ কাজ করে এখন অনেকেই স্বাবলম্বী।
শিমুল বাকচি নামে এক কারিগর জানান, এক সময় জলিরপাড়সহ গোপালগঞ্জের অনেকেই ইমিটেশনের গয়না তৈরি করত। কিন্তু এ সব গয়নার চাহিদা কমে যাওয়ায় কারিগরদের সংখ্যা কমে গেছে। তাই এখন অনেক কারিগররা তাবিজ তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করছে।
জলিরপাড়ের রূপচাঁদ বাকচি নামে আরেক কারিগর বলেন, ‘আমরা ভোর থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত কাজ করে ৯-১০ কেজি তাবিজ তৈরি করতে পারি। এতে দৈনিক ১৫০-২০০ টাকা মজুরি পাই। বাকি সময় অন্যান্য কাজ করি। এতে যা রোজগার করি তাতেই আমাদের সংসায় চলে যায়।’
জলিরপাড় ব্রোঞ্জ মার্কেট সমিতির সভাপতি মন্টু রায় বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘তাবিজের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাই এ কাজে ঝুঁকছে কারিগররা। সরকার আমাদের এ ব্যাপারে সহযোগিতা করলে অবশ্যই এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব।’