স্ত্রীর চুল কেটে দিল যৌতুকলোভী স্বামী
চাহিদা মতো যৌতুকের টাকা দিতে না পারায় রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে স্ত্রীকে শারীরিক নির্যাতনের পর চুল কেটে দিয়েছেন রিয়াজ প্রামাণিক নামে যৌতুকলোভী এক ব্যক্তি। নির্যাতনকারী ওই স্বামী উপজেলার জঙ্গল ইউনিয়নে অলংকাপুর গ্রামের টেংরাপাড়ার বাসিন্দা ওয়াজেদ প্রামাণিকের ছেলে।
নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূর নাম চুমকি বেগম (২৫)। এ ব্যাপারে গৃহবধূ চুমকি বেগম আইনের আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানা গেছে। ওই দম্পতির দুই বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) বেলা ২টার দিকে অভিযুক্ত স্বামীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বালিয়াকান্দি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন চুমকি।
জানা যায়, অভিযোগ দায়েরের পরপরই থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) একেএম আজমল হুদা আসামিকে দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেফতারের নির্দেশনা দিয়েছেন। থানার একটি টিম অভিযুক্ত স্বামীকে গ্রেফতারের জন্য অভিযানে নেমেছে।
চুমকির বড় ভাই ভ্যান চালক পিকুল কাজী বার্তা২৪.কম-কে জানান, ২০১৩ সালে আমার বোনের সাথে রিয়াজের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই সে বিভিন্ন সময়ে যৌতুকের জন্য চাপ দিতে থাকে। আমার বাবা মেয়ের সুখের কথা ভেবে বিয়ের কিছুদিন পর নগদ ৫০ হাজার টাকাও তাকে দেন। কিন্তু সে মাঝে মাঝেই টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে। টাকা না দিলে শারীরিক নির্যাতন করতে থাকে। বেশ কয়েকবার আমরা চুমকিকে আমাদের বাড়িতে নিয়ে আসি এবং ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে অভিযোগ দিলে তারা মুচলেকা দিয়ে নিয়ে যায়। কিন্তু এবার ঐ পাষণ্ড আমার বোনকে মেরে চুল কেটে দিয়ে একটি বদ্ধ ঘরের মধ্যে তালা মারে রাখে। পরে আমরা খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে এসেছি।
নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ চুমকি বার্তা২৪.কম-কে জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় টাকা দিতে অপারগতা জানালে রাতে তার স্বামী তাকে বেধড়ক মারধর করে চুল কেটে দিয়ে একটি রুমের মধ্যে আটকে রাখে। পরে সে সুযোগ বুঝে এক প্রতিবেশীর মোবাইল নিয়ে তার বাবাকে খবর দিলে তারা তাকে উদ্ধার করে।
এ সময় চুমকি আরও বলেন, 'বিয়ের পর থেকেই সে আমাকে যৌতুকের জন্য মারধর করতে থাকে। আমি সংসারের মায়ায় এতদিন মুখ বন্ধ করে ছিলাম। কিন্তু এবার আমাকে চুল কেটে দিয়েছে। ও একটা পাষণ্ড। আমি এর উপযুক্ত শাস্তি চাই।'
বালিয়াকান্দি থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) একেএম আজমল হুদা বার্তা২৪.কম-কে জানান, ঘটনাটি শোনার পর আমি ভীষণ অবাক হয়ে গিয়েছি। মানুষ এখনো এতো পাষণ্ড কেন? আমি তাৎক্ষণিক ভাবে ডিউটি অফিসারকে নির্দেশ দিয়েছি অভিযোগ পরে, আগে অভিযুক্ত স্বামীকে গ্রেফতার করে আমার সামনে ধরে নিয়ে আসো। নির্যাতিত মেয়েটি যাতে উপযুক্ত ও ন্যায় বিচার পায় সেজন্য আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।'