বৈশাখী শাড়ি তৈরিতে ব্যস্ত সিরাজগঞ্জের তাঁতিরা
নতুন স্বপ্ন, উদ্যম আর প্রত্যাশার আবির ছড়ানো বাঙালি জাতির সবচেয়ে বড় উৎসব পহেলা বৈশাখ। এই উৎসব ঘিরে সিরাজগঞ্জের হাজার-হাজার তাঁতি এখন ব্যস্ত নানা রংয়ের শাড়ি তৈরিতে। দিনরাত খটখট আওয়াজে মুখরিত জেলার এনায়েতপুর, বেলকুচি, শাহজাদপুর ও সয়দাবাদের তাঁতপল্লীগুলো।
বৈশাখী শাড়ি, তাতে নকশা না থাকলেই নয়। তাই তো সবার মন ভরাতে তৈরি করা হচ্ছে ঢাক-ঢোলসহ নানান প্রতীক সম্বলিত নকশার শাড়ি। বাহারি ডিজাইন ও উন্নত সুতা দিয়ে তৈরি করায় ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রয়েছে সিরাজগঞ্জের শাড়ির ব্যাপক চাহিদা। ২০০ থেকে দুই হাজার টাকা দামের এসব শাড়ি কিনতে তাঁতি বাড়িতে ভিড় করছেন ব্যাপারীরা।
এ উৎসবে সিরাজগঞ্জে প্রায় পাঁচ কোটি টাকার শাড়ি বেচাকেনার আশাবাদ তাঁতিদের। বৈশাখকে ঘিরে সিরাজগঞ্জের শাড়ির সুনাম ছড়িয়ে পড়ুক দেশ-বিদেশে- এমনটাই চাওয়া এ অঞ্চলের তাঁতীদের। সিরাজগঞ্জের তৈরি রং বেরঙের শাড়িতে বর্ণিল হয়ে উঠবে সিরাজগঞ্জসহ গোটা দেশ; এমনটা প্রত্যাশা তাদের।
সিরাজগঞ্জের সয়দাবাদে কথা হয় কাপড়ের ব্যাপারী নুর মোহাম্মদের সাথে। তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘শাহজাদপুর থেকে এসেছি বৈশাখী কাপড় কেনার জন্য। খুচরা বাজারে বৈশাখের বাজার এখনও লাগেনি। তবে পাইকারি বাজারে কাপড়ের চাহিদা আছে প্রচুর। প্রতি বছর আট থেকে নয় লাখ টাকার কাপড় কিনে তা খুচরা বাজারে বিক্রি করি। তাতে আমার এক থেকে দেড় লাখ টাকা লাভ হয়।’
কাপড় ব্যবসায়ী শামসুল আলম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘দেশজুড়ে সিরাজগঞ্জের তৈরি বৈশাখী শাড়ির কদর রয়েছে। যেহেতু মৌসুমি ব্যবসা, এজন্য কাপড় তৈরি করতে প্রচুর টাকা লাগে। কোনো ব্যাংক থেকে অল্প সুদে আর্থিক সহায়তা পেলে চাহিদা পূরণ করতে পারতাম।’
আরেক কাপড় ব্যবসায়ী শাহ আলম বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জের গাউছিয়া, কুষ্টিয়ার পোড়াদহ, নরসিংদীর বাবুর হাটসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকাররা এখানে আসেন শাড়ি কিনতে। সিরাজগঞ্জের তৈরি বৈশাখী শাড়ি দেশের প্রায় ৭০ ভাগ চাহিদা মেটাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বাপ-চাচারা মিলে প্রায় তিন কোটি টাকার শাড়ি বিক্রি করবো। শাড়ির দামটা একটু বেশি। কারণ সুতা ও রংয়ের দামটা একটু বেশি। এ কারণে লাভ একটু কম হচ্ছে। এছাড়া শাহজাদপুর, এনায়েতপুর ও বেলকুচিতেও বৈশাখী শাড়ি তৈরি করা হয়।’