পরীক্ষার দিনেই লাশ হয়ে ফিরছেন নুসরাত

  • ফয়েজুল ইসলাম, নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

নুসরাত জাহান রাফি, ছবি: সংগৃহীত

নুসরাত জাহান রাফি, ছবি: সংগৃহীত

ফেনীর সোনাগাজী থেকে: তৃতীয়দিনের মতো আলিম পরীক্ষা দিতে এসে মাদরাসা অধ্যক্ষের অনুসারীদের বর্বরতার শিকার হয়েছেন সোনাগাজী ইসলামীয়া ফাজিল মাদরাসার শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফি। অগ্নিদগ্ধ নুসরাত ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে বুধবার (১০ এপ্রিল) রাত ৯টার ৩০ মিনিটের দিকে মৃত্যুবরণ করেন।

৬ এপ্রিল আরবি প্রথমপত্র পরীক্ষার দিন অগ্নিদগ্ধ হন তিনি। মাঝের ৮ ও ১০ এপ্রিল দুটি পরীক্ষার গেলেও সেখানে উপস্থিত হতে পারেননি ঢামেকের বার্ন ইউনিটে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়া নুসরাত। অবশেষে বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) আল-ফিকহ দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষার দিন নিজ এলাকায় লাশ হয়ে ফিরছেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

অন্যান্য সহপাঠীরা পরীক্ষা শুরুর আগ মুহূর্তে কেন্দ্রে প্রবেশ করলেও নুসরাতের লাশ ঢামেকের মর্গে। লাশের জন্য অপেক্ষায় রয়েছেন এলাকাবাসী। তার বাড়িতে চলছে লাশ দাফনের প্রস্তুতি। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে লাশ দাফন করা হতে পারে বলে তার আত্মীয় স্বজনরা জানিয়েছেন। তবে সেটার জন্য নির্ভর করতে হচ্ছে ঢামেকের ছাড়পত্রের ওপর।

ঢামেক সূত্রে জানা যায়, ময়নাতদন্ত শেষে দুপুর ১২টার দিকে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হতে পারে।

বিজ্ঞাপন

সরেজমিনে দেখা যায়, নুসরাতের লাশ আসাকে কেন্দ্র করে এলাকায় শোকের ছায়া বিরাজ করছে। তার বাড়িতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সরব উপস্থিতি রয়েছে। বাড়িতে আত্মীয় স্বজনদের কান্নার রোল পড়েছে। আত্মীয় স্বজন ও এলাকাবাসী আসা যাওয়া করছে নুসরাতের বাড়িতে। সবার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে, কখন আসবে নুসরাতের লাশ?

এ সম্পর্কে পিংকু নামের নুসরাতের এক নিকট আত্মীয় বলেন, 'এভাবে নুসরাতকে যেতে হবে আমরা তা স্বপ্নেও ভাবিনি। নুসরাত খুব ভালো ও পর্দাশীল মেয়ে ছিল। দীর্ঘদিন যাবৎ ওই অধ্যক্ষ তাকে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। আমরা চাই, এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের কঠিন শাস্তি হোক। যাতে ভবিষ্যতে আর কোন নুসরাতকে এভাবে মরতে না হয়।'

এলাকাবাসী ও আত্মীয় স্বজনরা নুসরাত সম্পর্কে জানান, পর্দাশীল হলেও সে প্রতিবাদী মেয়ে ছিল। মাদরাসা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার কারণেই তাকে জীবন দিতে হয়েছে। এছাড়া হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত ও মাদরাসা অধ্যক্ষের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রার্থনা করেছেন তারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, নুসরাতের এক সহপাঠী বলেন, 'নুসরাত খুব মেধাবী ছাত্রী ছিল। পরীক্ষা কেন্দ্রে তার আসনটি খালি দেখলেই কান্না চলে আসে।' হত্যাকাণ্ডের সাথে কারা জড়িত, এরকম প্রশ্নে তিনি কোন মন্তব্য করেননি।

এদিকে নুসরাতের লাশ আনার জন্য তার পরিবারের অধিকাংশই ঢাকায় অবস্থান করছেন। তারা নুসরাতের লাশ নিয়েই এলাকায় ফিরবেন।