ইলিশ নয়, রুই-পান্তা খেয়েই নববর্ষ উদযাপন
বৈশাখ মানেই পান্তা-ইলিশ। শহর ও গ্রামবাংলার মানুষের কাছে এটি চিরায়ত নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। লক্ষ্মীপুরেও প্রতিবার পান্তা-ইলিশ খেয়ে নববর্ষের সকালটিকে স্মরণীয় করে রাখা হত।
কিন্তু মেঘনার রূপালি ইলিশে সমৃদ্ধ হয়েও আজ বৈশাখের প্রথম দিনে পান্তা-ইলিশ খেতে পারেনি লক্ষ্মীপুরবাসী। রুই মাছ ভাজা দিয়েই পান্তা ইলিশের ভাবমূর্তি রক্ষা করতে হয়েছে এখানকার মানুষদের। যাকে বলে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানো।
অভয়াশ্রমের কারণে ইলিশ শিকারে দুই মাস নিষেধাজ্ঞা থাকায় মেঘনার রূপালি ইলিশ ধরা বন্ধ রয়েছে। যার কারণেই লক্ষ্মীপুর ও পাশের জেলা চাঁদপুরেও পান্তা ইলিশ খেয়ে নববর্ষের সকালটি উদযাপন করতে পারেনি। আবার অনেকেই হয়তো ফ্রিজে সংরক্ষিত ইলিশ পান্তার সাথে খেয়েছেন।
তবে প্রশাসনের আয়োজিত অনুষ্ঠানসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে ইলিশের বদলে রুই, কই ও তেলাপিয়া মাছ দিয়ে পান্তা পরিবেশন করা হয়। সাথে ছিল নানা ধরনের ভর্তা ও পোড়া মরিচ। আবার অনেকে সকালটি উদযাপন করেছে মাটির বাসনে করে দই-চিড়া খেয়ে।
এভাবেই নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে লক্ষ্মীপুরে বাংলা নববর্ষ ১৪২৬ উদযাপন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে রোববার (১৪ এপ্রিল) সকালে জেলা কালেক্টরেট ভবন প্রাঙ্গণ থেকে একটি বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
এ সময় লাঠি খেলা ও পালকি প্রদর্শনের মতো বাঙালির ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়। এতে জেলার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ দলমত নির্বিশেষে অংশগ্রহণ করেন।
শোভাযাত্রা শেষে কালেক্টরেট প্রাঙ্গণে বেলুন উড়িয়ে ৫ দিনব্যাপী লোকজ মেলা ও মনোজ্ঞ সঙ্গীতানুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক অঞ্জন পাল।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার আ স ম মাহাতাব উদ্দিন, সিভিল সার্জন মোস্তফা খালেদ আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম ফারুক পিংকু, সাধারণ সম্পাদক নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন প্রমুখ।
পরে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে উপস্থিত সকলের মাঝে বাঙালির ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন প্রকার খাবার সামগ্রীসহ পান্তা ও রুই মাছ ভাজা পরিবেশন করা হয়।