বৈশাখকে ঘিরে চাহিদা বেড়েছে কৃষি পণ্যের

  • কাজল সরকার, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, হবিগঞ্জ, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

বৈশাখে চাহিদা বৃদ্ধি পায় কৃষি পণ্যের, ছবি: বার্তা২৪

বৈশাখে চাহিদা বৃদ্ধি পায় কৃষি পণ্যের, ছবি: বার্তা২৪

দেশে একসময় বাঁশ ও বেতের তৈরি নানা সামগ্রীর ব্যাপক চাহিদা ছিল। কিন্তু দিন দিন এর স্থান দখলে নিয়ে যাচ্ছে সহজলভ্য প্লাস্টিক পণ্য। একদিকে বাঁশ ও বেতের উৎপাদন কমে যাওয়া, অন্যদিকে ক্রমবর্ধমান প্লাস্টিক শিল্পের প্রসার এর অন্যতম কারণ। তাছাড়া সরকারিভাবে বাঁশ ও বেত উৎপাদনে সংশ্লিষ্ট কৃষকদের তেমন কোনো পরামর্শ বা উৎসাহ দেয়া হচ্ছে না। ফলে নানা কারণেই শিল্পটি হারিয়ে যাচ্ছে।

তবে বৈশাখ মাস এলে এই বাঁশ শিল্পের কদর বেড়ে যায় স্ব-মহিমায়। এছাড়া কৃষি কাজে ব্যবহৃত অন্য সব ধরনের পণ্যেরও চাহিদা বাড়ে ব্যাপকহারে। সারাবছর কৃষি পণ্য উৎপাদনের সাথে জড়িতদের অলস সময় কাটলেও বৈশাখে বাড়ে তাদেরও কদর। এই সময়টাতে ব্যবসায়ীদের পণ্য সরবরাহ করতে হিমশিম খেতে হয় উৎপাদনকারীদের।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (২২ এপ্রিল) সন্ধ্যায় হবিগঞ্জ শহরের চৌধুরী বাজারে কৃষি পণ্যের হাটে গিয়ে দেখা যায় বিশাল আয়োজন। ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগমে যেন মেলায় পরিণত হয়ে উঠেছে বাজারটি। অথচ সারা বছর এই বাজারে থাকে নীরবতা।

দেশে একসময় বাঁশ ও বেতের তৈরি নানা সামগ্রীর ব্যাপক চাহিদা ছিল, বার্তা২৪.কম

বিজ্ঞাপন

বাজার ঘুরে দেখা যায়, সেখানে সব ধরণের কৃষি পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। তবে সব চেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে ধান-চাল নেয়ার সব চেয়ে সুবিধাজনক পণ্য বাঁশের ঝুড়ি। (যেটি স্থানীয়রা টোকরি, উড়া, পুঁজা বলে ডাকেন)। এছাড়াও ধান শুকানোর চাঁচ, কাগজের পাল, ধান রাখার ক্ষুত্র গোলা, ধান কাটার কাঁচি ইত্যাদি বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতাদের চাপে দম ফেলার সুযোগ পাচ্ছেন না বিক্রেতারা।

তবে অনেক ক্রেতা অভিযোগ করেছেন তুলনামূলকভাবে দাম বেশি নিচ্ছেন বিক্রেতারা। অন্যদিকে বিক্রেতারা বলছেন সারা বছর চাহিদা কম থাকায় এসব পণ্য উৎপাদনের সাথে জড়িত অনেকেই সড়ে দাঁড়িয়েছেন। ফলে উৎপাদনকারীদের কাছ থেকে বেশি দামে কিনছে হচ্ছে তাদের।

এ ব্যাপারে বানিয়াচং উপজেলার যাত্রাপাশা গ্রামের বাসিন্দা মোহাম্মদ আলী লিমন বলেন- ‘বৈশাখ মাসে ধান ঘরে তুলার জন্য বাঁশের জিনিসগুলো খুবই উপকারী। তাই এসব কিনতে এসেছি।’

নবীগঞ্জ উপজেলার দত্তপাড়া গ্রামের ক্রেতা সমিরণ দাস বলেন- ‘অন্য সময়ের তুলনায় অনেক বেশি দাম নেয়া হচ্ছে। কিন্তু কিছুই করার নেই। মাঠের ধান ঘরে তোলার জন্য এসব পণ্যের তুলনা নেই। তাই বেশি দামেই নিতে হচ্ছে।’

মো. মতিউর খান নামে এক ক্রেতা বলেন- ‘সব কিছুতেই এখন ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট তৈরি করেন। বৈশাখকে ঘিরে কৃষি পণ্যের ব্যবসায়ীরাও তাই করেছেন। সব ধরণের পণ্যের গলাকাটা দাম নিচ্ছেন তারা।’

তবে ব্যবসায়ীদের দাবি ভিন্ন। ব্যবসায়ী আহমেদ আলী মকুল বলেন- ‘এসব পণ্য উৎপাদন করতে এখন বেশি খরচ বেশি হচ্ছে। যে কারণে উৎপাদনকারীদের কাছ থেকেই আমাদেরকে চড়া দামে কিনতে হচ্ছে। তাই বিক্রিও করতে হচ্ছে একটু বেশি দামে।’