তাড়াশে অর্ধশত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন ঝুঁকিপূর্ণ
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার ১৩৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান। এসব ভবনের শ্রেণি কক্ষের ভেতরের ছাদ ও বারান্দায় ফাটল দেখা দিয়েছে। এছাড়াও ছাদের পলেস্তরা খসে পড়ায় শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
তাড়াশ উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, অতি ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যালয়ের মধ্য উপজেলার চৌড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নাদো সৈয়দপুর মধ্যপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কুন্দইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গুয়ারাখী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রানীরহাট চককলামুলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চর-হামকুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বিরল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সিলট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গুল্টা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দিঘরীয়া-১ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চকরুসুলাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চরকুশাবাড়ি-২ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কালূপাড়া-বাশবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কাটাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানগুলোর নতুন ভবন নির্মাণ না করা হলে যেকোনো মূহুর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
১৯২৬ সালে উপজেলার তালম ইউনিয়নের চৌড়া গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। পরে ১৯৯৬ সালে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি পাকা ভবন নির্মাণ করেন সরকার। চৌড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টির পাকা ভবনে দেয়ালজুড়ে দেখা দিয়েছে বড় ধরনের ফাটল। আবার কোথাও কোথাও ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ায় বেরিয়ে এসেছে মূল কাঠামোর রড। বর্ষায় ফাটল দিয়ে পানি চুয়ে পড়ে শ্রেণিকক্ষে।
এসব ঝুঁকিপূর্ণ কক্ষেই ক্লাস করতে হয় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের। ভবনটি নির্মাণের পর নতুন করে মেরামত না হওয়ায় দেয়ালজুড়ে ফাটল দেখা দিয়েছে বলে অভিযোগ শিক্ষকদের। শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন জানায়, শ্রেণিকক্ষে আমাদের ক্লাস করতে হয় ভয়ে ভয়ে। আরেক শিক্ষার্থী সাদিয়া জাহান জানায়, ক্লাস চলাকালে অনেকবার ছাদের পলেস্তারা খসে পড়েছে। আর অভিভাবক ফজলুল হক জানান, আমার মেয়ে প্রতিদিন স্কুলে যায়। কিন্তু বিদ্যালয়টির কক্ষগুলোর যে অবস্থা আমরা তাতে চিন্তায় থাকি।
এ বিষয়ে উপজেলার সগুনা ইউনিয়নের নাদো সৈয়দপুর মধ্যপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, স্কুলের ভবনটি অনেক পুরাতন হওয়ায় শিক্ষার্থীদের আতঙ্কের মধ্যে ক্লাস করতে হয়। ভবনের দেয়ালে সামান্য একটি পেরেক লাগলেও পলেস্তরা খসে পড়ে। একই কথা জানালেন চৌড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল করিম।
তিনি জানান, বিদ্যালয়টির বয়স অনেকদিন হওয়ায় ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। তাছাড়া সে সময়ে ভবন নির্মাণের সময় অনিয়ম ছিল বলে টেকসই হয়নি। ঝড়ের সময় আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ভবনের বাইরে গিয়ে আশ্রয় নেই।
এ ব্যাপারে তাড়াশ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, উপজেলায় ১৩৬টি বিদ্যালয়ের মধ্য প্রায় ৫০টি বিদ্যালয়ের ভবন ঝুঁকিপূর্ণ। এর মধ্য অতিঝুঁকিপূর্ণ ১৪টি বিদ্যালয় রয়েছে। আর এই ভবনগুলার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।