বোরকা পরে ধর্ষণ মামলার আসামি ধরলো পুলিশ!

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট মৌলভীবাজার, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

গ্রেফতারকৃত ধর্ষণ মামলার মূল আসামি শুকুর আলী/ ছবি: সংগৃহীত

গ্রেফতারকৃত ধর্ষণ মামলার মূল আসামি শুকুর আলী/ ছবি: সংগৃহীত

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায় ১৭ বছরের কিশোরীকে গণধর্ষণের মামলার প্রধান আসামি শুকুর আলীকে (৩৫) ঘটনার ১০ দিন পর গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আর এই ধর্ষণ মামলার আসামিকে গ্রেফতার করতে বোরকা পরে রাস্তায় নামেন পুলিশের এক পুরুষ কনস্টেবল।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে রাজনগর উপজেলার টেংরা বাজার থেকে পুলিশ একটি সিএনজি অটোরিকশায় তল্লাশি চালিয়ে শুকুর আলীকে গ্রেফতার করে। এর আগে ঘটনার সাথে জড়িত অপর পাঁচ আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

বিজ্ঞাপন

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কুলাউড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সঞ্জয় চক্রবর্তী জানান, পুলিশের কাছে আগেই খবর ছিল, গণধর্ষণ মামলার মূল আসামি রাজনগর থানা এলাকায় রয়েছেন। খবর পেয়েই কুলাউড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভারপ্রাপ্ত) রাশেদুল ইসলামের নেতৃত্বে কৌশলী পুলিশ কর্মকর্তারা একটি পরিকল্পনা আঁটেন।

পরিকল্পনা অনুযায়ী এএসআই নাজমুলকে স্বামী, কনস্টেবল জুনায়েদকে কালো বোরকা পরিয়ে স্ত্রী সাজিয়ে অভিযানে নামে কুলাউড়া থানা পুলিশ। মোটরবাইকে করে চলতে থাকে শুকুর আলীকে বহনকারী সিএনজিকে লক্ষ করে। স্ত্রীর গায়ে সিএনজি দিয়ে ধাক্কা দেওয়ার অজুহাতে সিগন্যাল দিয়ে থামিয়ে চ্যালেঞ্জ করে ছদ্মবেশে থাকা এএসআই নাজমুল।

বিজ্ঞাপন

এ সময় সিএনজি থামিয়ে মোটরসাইকেল আরোহী ছদ্মবেশী পুলিশের সাথে তর্কে লিপ্ত হন চালক। এক পর্যায়ে সিএনজি অটোরিকশায় তল্লাশি চালিয়ে শুকুর আলীকে আটক করে পুলিশ।

এর আগে পুলিশ একই মামলার আসামী হাসান মিয়াকে আটক করতে সক্ষম হয়। তার দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির পর অভিযান চালিয়ে পুলিশ উপজেলার জয়চন্ডী ইউনিয়নের পুসাইনগর ও জুড়ী উপজেলার ফুলতলা সীমান্ত এলাকা থেকে বিলাল মিয়া, জাহাঙ্গীর আলম, সুজন মিয়া ও সুফিয়ান মিয়াকে গ্রেফতার করে। এর মধ্যে বিলাল ও জাহাঙ্গীর দালালের মাধ্যমে চোরাই পথে ভারতে পালানোর চেষ্টা চালিয়েছিলেন।

এ ব্যাপারে কুলাউড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভারপ্রাপ্ত) রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘গণধর্ষণের ঘটনার ১০ দিনের মাথায় মোট ছয় আসামিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হই। তারা আদালতে এ ব্যাপারে জবানবন্দিতে ঘটনার দায় স্বীকার করেছেন।’

উল্লেখ্য, ১৫ এপ্রিল রাতে কুলাউড়া পৌরসভাধীন আশুরিঘাট এলাকায় ১৭ বছরের এক কিশোরীকে ডেকে নিয়ে নির্জন স্থানে সাত জন মিলে ধর্ষণ করেন এবং সেই দৃশ্য মোবাইল ফোনে ধারণ করেন আসামিরা। এ ঘটনায় কিশোরীর মা বাদী হয়ে কুলাউড়া থানায় শুকুর আলীকে প্রধান আসামি করে সাত জনের বিরুদ্ধে কুলাউড়া থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। ঐ দিন রাতেই হাসান আহমদ (২৪)-কে পুলিশ আটক করে।