হবিগঞ্জে ধান কাটতে শ্রমিক সংকট, মাঠে শিক্ষার্থীরা
হবিগঞ্জের বিভিন্ন হাওরে সোনালি ধান ঝিলিক দিলেও ঘরে তোলা নিয়ে শঙ্কিত কৃষকরা। প্রতিটি হাওরেই ধান কাটার শ্রমিকের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় অনেক হাওরের ধান অতিরিক্ত পেকে যাওয়ায় ঝড়ে পড়ছে। উপায় না দেখে কৃষকদের সন্তানেরা, যারা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, তারা ধান কাটতে মাঠে নেমে পড়েছেন।
গেল দুই বছর হবিগঞ্জের বিস্তীর্ণ হাওরের ধান ঘরে তুলতে পারেননি কৃষকরা। আগাম বন্যায় সবগুলো হাওরের আধা পাকা ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। এ বছর প্রতিটি হাওরে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ধানের এমন ফলনে উৎফুল্ল ছিল কৃষকেরা। কিন্তু সেই আনন্দ মলিন করে দিচ্ছে তীব্র শ্রমিক সংকট। অনেক হাওরেই শ্রমিক সংকটের কারণে ধান ক্ষেতেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সেই সাথে ঝড়-বৃষ্টির শঙ্কায় নির্ঘুম রাত কাটছে কৃষকদের।
কৃষকরা জানান, কয়েক বছর ধরেই দেশীয় শ্রমিকের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। আগে নোয়াখালী, কুমিল্লা, ব্রাক্ষণবাড়িয়া, সিরাজগঞ্জ, পাবনাসহ দেশের অন্যান্য অঞ্চল থেকে ধান কাটার জন্য শ্রমিক আসতো হবিগঞ্জে। কিন্তু এ বছর অন্য কোনো এলাকা থেকেও শ্রমিকরা আসেননি। ফলে এ বছর শ্রমিক শংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে।
এ অবস্থায় শুধু গ্রামের শিক্ষার্থীরাই নয়, শহরে থেকে পড়ুয়া অনেক শিক্ষার্থীও এসেছেন হাওর সংলগ্ন গ্রামে, কৃষকদের সাথে ধান কাটতে। তবে করে প্রচণ্ড গরমে ধান কাটতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন অনেক শিক্ষার্থী।
অনেক কৃষক শ্রমিক সংকট থেকে মুক্তি পেতে ধান কাটার মেশিনের বিকল্প দেখছেন না। তারা বলছেন, সরকারিভাবে কৃষকদের মধ্যে ধান কাটার মেশিন বিতরণ করা হলে এই অবস্থা হতো না।
এ ব্যাপারে বানিয়াচং উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক জগদীশ চন্দ দাস বলেন, ‘আমরা দুই বছরে কৃষকদের ১০টি কম্বাইন্ড, আটটি পাওয়ার প্রেশার এবং ৬৭টি রিপার মেশিন দিয়েছি। এগুলো ব্যবহার করলে শ্রমিক সংকট কিছুটা কমবে।’
তবে যদি আরো তথ্য প্রযুক্তি উন্নত হয় তাহলে হাওরে শ্রমিকের সমস্যা সমাধান হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।