ফেরিতে পানের দোকানের ভাড়া মাসে অর্ধ লাখ টাকা!

  • সোহেল মিয়া, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, রাজবাড়ী, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌ রুটের বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন ফেরি/ ছবি: বার্তা২৪.কম

দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌ রুটের বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন ফেরি/ ছবি: বার্তা২৪.কম

আশ্চর্যজনক হলেও সত্য যে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌ রুটের ফেরিতে অবস্থিত ছোট একটি চা-পানের দোকানের মাসিক ভাড়া প্রায় অর্ধ লাখ টাকা। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন সংস্থাকে এই বিপুল পরিমাণ ভাড়া পরিশোধ করার জন্য দোকানের মালিক তার প্রতিটি পণ্যের নির্ধারিত দামের চেয়ে অধিক মূল্য আদায় করছেন ক্রেতাদের কাছ থেকে।

সরেজমিনে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া থেকে পাটুরিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে আসা বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন ফেরিতে গিয়ে দেখা যায় যাত্রীদের জন্য রান্না করা খাবারগুলো খোলা একটা টেবিলের উপর সাজিয়ে রাখা হয়েছে। আর পাশের টেবিলে  অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসে নিরুপায় হয়ে যাত্রীরা খাচ্ছেন।

বিজ্ঞাপন

ফেরিতে অবস্থিত দোকানগুলোতে প্রতিটি পণ্যের দাম নির্ধারিত মূল্যের থেকে পাঁচ টাকা করে বেশি নেওয়া হচ্ছে। শুধু বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমীন ফেরিতেই নয় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌ রুটে যতগুলো ফেরি চলাচল করে, সব ফেরির দোকানগুলোতেই বেশি দাম হাকাচ্ছেন দোকানদাররা।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Apr/28/1556420122066.gif
পানের দোকানের ভাড়া পরিশোধের রশিদ/ ছবি: সংগৃহীত

 

বিজ্ঞাপন

নির্ধারিত মূল্যের বেশি দাম নেওয়ার বিষয়ে বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন ফেরির  চায়ের দোকানদার রমজান আলী বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘প্রতিদিন দোকানের ভাড়া দিতে হয় এক হাজার ৬০০ টাকা। তাতে মাসে আসে ৪৮ হাজার টাকা। এতো টাকা দোকান ভাড়া কিভাবে দেব? বাধ্য হয়েই ক্রেতাদের কাছ থেকে সব পণ্যের নির্ধারিত মূল্যের উপর থেকে পাঁচ টাকা বেশি নিচ্ছি।‘

রাজবাড়ী জেলার জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক মো: শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘ভোক্তাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় কোনোভাবেই গ্রহণ ও সমর্থনযোগ্য নয়। এ ব্যাপারে আইনের সর্বোচ্চ ধারা প্রয়োগ করা হবে।’

চিটাগাং থেকে আসা শ্যামলী পরিবহনের যাত্রী সাতক্ষীরা জেলার বাসিন্দা মাজেদুল হক বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘ফেরির কেবিনে গিয়ে একটি ঠাণ্ডা পানির বোতল ক্রয় করি। কিন্তু পানির বোতলের গায়ে মূল্য ১৫ টাকা থাকলেও দোকানদার আমার কাছ থেকে ২০ টাকা নিয়েছে। তাকে প্রশ্ন করলে তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দেন, ইচ্ছা হলে নেন, না হলে রেখে দেন।’

বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন ফেরির ক্যান্টিন ম্যানেজার কবির হোসেন বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘আমার ক্যান্টিনের জন্য প্রতি মাসে দুই লাখ ৩৬ হাজার টাকা ভাড়া দিতে হয়। এছাড়া এতগুলো কর্মচারী এখানে কাজ করে, তাদের খরচ রয়েছে। আপনারাই বলেন আমরা কী করব?’

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Apr/28/1556420187317.gif
রমজান আলীর পানের দোকান/ ছবি: বার্তা২৪.কম

 

ফেরিতে পানের দোকানের উচ্চ ভাড়া ও ত্রেতাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় সম্পর্কে রাজবাড়ী জেলার জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক মো: শরিফুল ইসলাম বার্তা২৪.কম-কে জানান, ‘ক্রেতাদের কাছ থেকে যে অজুহাত দেখিয়ে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি অর্থ আদায় করছে এটা কোনোক্রমেই গ্রহণ ও সর্মথনযোগ্য নয়। আর এতো টাকা দিয়ে কেন দোকান ভাড়া নেন এখানে একটা  প্রশ্ন থেকে যায়।’

তিনি বলেন, ‘ভোক্তাদের কাছ থেকে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত দাম নেওয়ার ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিসির সাথে কথা বলেছি। তারা জানিয়েছে, এরই মধ্যে তারা সকল ফেরির ক্যান্টিন ম্যানেজারদেরকে অতিরিক্ত দাম না নেওয়ার জন চিঠি দিয়েছেন। পহেলা মে থেকে বিশেষ অভিযান চালাব।’