মেঘনা উপকূলে ফণীর তাণ্ডব
দেশের পূর্ব উপকূলীয় জেলা লক্ষ্মীপুরের পাঁচটি উপজেলার মধ্যে চারটি মেঘনা নদী ঘিরে রেখেছে। যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ এই জেলার মানুষের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। ঘূর্ণিঝড় ফণীও ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে মেঘনা উপকূলে।
শুক্রবার (৩ মে) বিকাল থেকে শনিবার (৪ মে) সকাল পর্যন্ত ফণীর তাণ্ডবে এক বৃদ্ধা নিহতসহ আহত হয়েছেন প্রায় ১৫ জন। এছাড়া প্রায় তিন শতাধিক কাঁচা, টিনসেড ও আধাপাকা ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। দিনব্যাপী লক্ষ্মীপুরে গুমোট আবহাওয়া ছিল। বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির সঙ্গে ঝড়ো হাওয়া বইছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মেঘনায় পানির উচ্চতা কিছুটা কমেছে।
এ তাণ্ডবের কিছু ভিডিও ধারণ করেছেন রামগতি ও কমলনগর মেঘনা তীরবর্তী এলাকার কয়েকজন তরুণ। ভিডিওতে দেখা যায়, রামগতিতে প্রচণ্ড বেগে বাতাস বইছে। সঙ্গে সঙ্গে ভারী বৃষ্টি। এদিকে মেঘনার তীব্র ঢেউয়ের ধাক্কায় কমলনগর উপজেলার মাতাব্বর হাট এলাকার মেঘনা নদীর তীর রক্ষা বাঁধটি ধসে পড়েছে।
ফণীর তাণ্ডবে নিহত আনোয়ারা খাতুন রামগতির চর আলগীতে মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন। তার মেয়ের ভাষ্য মতে, ঝড় শুরু হলে তার মা আনোয়ারা খাতুন চৌকির উপর উঠে দাঁড়ান। এরপরই ঝড়ে ঘরের চালা উড়ে যায়। বাড়ির অন্য ঘরগুলো বাতাসে ভেঙে যাচ্ছে দেখে তিনি ঘর থেকে বের হন। এ এ সময় প্রচণ্ড বাতাসে তিনি অন্যত্র গিয়ে আঁচড়ে পড়েন। এতে তার কপাল ফেটে রক্ত বের হতে থাকে। তাকে হাসপাতালে নেওয়ার সময় তিনি মারা যান।
নিহত আনোয়ারা খাতুন রামগতির চরপোড়াগাছা ইউনিয়নের চরপোড়াগাছা গ্রামের মৃত শফিক উল্লাহর স্ত্রী।
রামগতি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আমান উল্লাহ জানিয়েছেন, শনিবার সকালে ফণী ব্যাপক তাণ্ডব চালায় রামগতির চর আলগীসহ কয়েকটি এলাকায়। এতে বিধ্বস্ত ঘর-বাড়ি ও ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করা হচ্ছে।
রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রফিকুল হক বলেন, ‘ফণীর প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। ঝড়ে ভেঙে পড়া ঘরের চাপায় পড়ে একজন নিহত হয়েছেন। এছাড়া বিভিন্ন এলাকায় ঘর ভেঙে আরও কয়েকজন আহত হয়েছে।’