হবিগঞ্জের বাজারে মধুমাসের হাওয়া
তাপ প্রবাহের দাপট আর ঘূর্ণিঝড় ফণীর আতঙ্ক দেখিয়ে বিদায় নিল বৈশাখ। শুরু হলো ‘মধুমাস’ খ্যাত জৈষ্ঠ্য মাস। রসালো শাঁসালো হরেক রকম ফলের ঘ্রাণ আর কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়ার লাল বর্ণের প্রকৃতি নিয়ে হাজির হয়েছে জৈষ্ঠ্য। যার সৌরভে ভরে উঠেছে প্রকৃতি। সিঁদুরে রাঙা আম-লিচু, আর কাঁচাসোনা রঙের কাঁঠালের সাথে ফুলের সমারোহ প্রকৃতিকে যেন সাজিয়েছে এক অন্যরকম সাজে।
শুধু মধু মাসের আগমনই ঘটেনি; একই সাথে চৈত্র-বৈশাখের খরতাপে অতিষ্ঠ তৃষ্ণার্ত মানুষের প্রাণ জুড়াতে বাজারে উঠেছে হরেক রকমের ফল। নান ফলের মধুঘ্রাণে ভরে উঠছে বাজারের চারপাশ। যদিও ফলের দাম তুলনামূলকভাবে বেশি বলে দাবি ক্রেতাদের। তবে ব্যবসায়িরা বলছেন, এখনও বাজারে ফলের প্রাচুর্যতা বাড়েনি। তাই দাম একটু বেশি।
হবিগঞ্জ শহরের চৌধুরী বাজারে বসে ফলের সবচেয়ে বড় সমাহার। সেখানে বিভিন্ন জাতের আম, লিচু, কাটাল, আনারস, তরমুজসহ বাহারি ফলের সমাহার বসেছে। এছাড়াও শহরের বিভিন্ন স্থানে ফুটপাতেও বসেছে ফলের মেলা। আবার ফলের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড়ও ছিল চোখে পড়ার মতো। মিষ্টি এই ফলগুলো নতুন বাজারে আসায় সব ধরণের ক্রেতারাই কম বেশি কেনার চেষ্টা করছেন। তবে বাজার ঘুরে দেখা যায় সবচেয়ে বেশি ভিড় ছিলে আম, লিচু ও কাঠালের দোকানে।
সরেজমিনে চৌধুরী বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি ১০০ পিস লিচু বিক্র হচ্ছে ২২০ থেকে ২৩০টাকায়, বিভিন্ন জাতের আম বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৬০ টাকায়। তবে কাঁঠালের দাম গতবারের চেয়ে একটু বেশি। বিক্রেতারা বলছেন, কাঁঠালের দাম এখন থেকে কমবে।
চৌধুরী বাজারে দেশি তরমুজের দাম অন্যান্য জায়গার তুলনায় কম। প্রতি পিস তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকা দরে। তবে বিদেশি তরমুজের দাম একটু বেশি। আনারস পাওয়া যাচ্ছে এক হালি (৪টি) ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। আনারসের দামও সামনে কমবে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।
নবীগঞ্জের ক্রেতা মো. ইসমাইল হোসেন বাচ্চু বলেন, ‘প্রশান্তির জন্য আল্লাহ তা-আলা নানা রকমের রসালো ফল আমাদের দান করেছেন। তবে সবচেয়ে বেশি মিষ্টি জাতীয় ফল পাওয়া যায় জৈষ্ঠ্য মাসে। এ মাসে আম, জাম, কাঁঠাল, লিচুসহ বিভিন্ন ধরণের ফল বাজারে আসে।’
তিনি বলেন, ‘হবিগঞ্জ আসছিলাম মূলত অন্য একটি কাজে। কিন্তু নতুন এই মিষ্টি ফলগুলো দেখে আর লোভ সামলাতে পারলাম না। তাই ভাবলাম পরিবার পরিজনের জন্য কিছু ফল নিয়ে যায়।’
শহরের রাজনগর এলাকার বাসিন্দা মো. সাঈদ আলী বলেন, ‘এখন রমজান মাস চলছে। এর মধ্যে প্রচণ্ড গরমও। সারাদিন রোজা রাখার পর ইফতারে এই ফলগুলো খেলে শরীর অনেকটা ভালো থাকে। তাই দাম একটু বেশি হলেও নিতে আসছি।’
ফল ব্যবসায়ী মো. আজগর আলী বলেন, ‘এই ফলগুলো নতুন বাজারে এসেছে। তাছাড়া এখনও সব জায়গায় ফল পাঁকেনি। ফল যখন বাজারে বেশি বেশি আসবে তখন এমনিতেই দাম কমে যাবে।’