কমিটি নিয়ে বগুড়ায় বিএনপির দুই গ্রুপ মুখোমুখি
বগুড়ায় বিএনপির দলীয় কার্যালয় দখলে নেওয়াকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা বিরাজ করছে। দলটির দুই গ্রুপ মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। সংঘর্ষ এড়াতে বুধবার (২২ মে) বিকাল থেকে কার্যালয়ের সামনে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
শহরের নবাববাড়ী সড়কে অবস্থিত জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে দুই গ্রুপের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিকালে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী ধাক্কাধাক্কি হয়। পরে, সমঝোতা না হওয়া পর্যন্ত কোনো গ্রুপের নেতাকর্মীদের কার্যালয়ে প্রবেশে পুলিশ নিষেধাজ্ঞা দেয়।
এ পর্যায়ে উভয়পক্ষের নেতারা আলোচনায় বসার প্রস্তাব দেন। আলোচনার জন্য বৃহস্পতিবার (২৩ মে) দিন ধার্য করা হয়। এরপরই পরিস্থিতি শান্ত হয়।
বগুড়া জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয় গত ১৫ মে। ওই দিনই ওই কমিটির আহবায়ক সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মোহাম্মদ সিরাজকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করে একটি গ্রুপ। ওই কমিটি বাতিলের দাবিতে কার্যালয়ে তালা দেন তারা।
বিএনপির আরেক গ্রুপও কার্যালয়ে আরেকটি তালা ঝুলিয়ে দেয়। এভাবে প্রায় প্রতিদিনই চলছে দলীয় কার্যালয়ে তালা ভাঙা ও পাল্টা তালা দেওয়ার ঘটনা।
সকালে এক গ্রুপ কার্যালয়ের সামনে সিরাজের কুশপুতুল দাহ করে তালা লাগিয়ে দেয়। সন্ধ্যায় আরেক গ্রুপ সেই তালা ভেঙে অফিস দখলে নেয়। এ ধরনের কর্মকাণ্ডে সাধারণ কর্মী ও সমর্থকরা অতিষ্ট হয়ে উঠেছেন। আহবায়ক কমিটির বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ায় ইতোমধ্যে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। বিএনপি, ছাত্রদল ও যুবদলের বেশ কয়েকজনকে বহিস্কারও করা হয়েছে।
বুধবার বিকাল ৩টার দিকে আহবায়ক কমিটির বিপক্ষের গ্রুপ দলীয় কার্যালয়ে সামনে সংবাদ সম্মেলন আহবান করে। এ খবর জানতে পেরে দুপুর আড়াইটায় আহবায়ক কমিটির নেতাকর্মীরা কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে তালা ভাঙার চেষ্টা করে। এসময় বিপক্ষ গ্রুপের নেতাকর্মীরা বাধা দিলে শুরু হয় ধাক্কাধাক্কি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে দুই গ্রুপের নেতাকর্মীদের সরিয়ে পুলিশ কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয়।
পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, নিজেদের মধ্যে সমঝোতা না হলে কোনো পক্ষই কার্যালয়ে ঢুকতে পারবে না। পুলিশের এই বক্তব্য শুনে আহবায়ক কমিটির পক্ষে রেজাউল করিম বাদশা, আলী আজগর তালুকদার হেনা এবং ফজলুল বারী তালুকদার বেলাল এবং অপর গ্রুপের পরিমল চন্দ্র দাস, শাহ মেহেদী হাসান হিমু এবং শাহাবুল আলম পিপলু আলোচনা শুরু করেন। প্রায় আধা ঘণ্টা আলোচনা শেষে সিদ্ধান্ত হয়- বৃহস্পতিবার উপ-নির্বাচনে মনোনয়নপত্র উত্তোলনের কাজ শেষে দুই পক্ষের নেতারা আলাচনায় বসবেন।
এরপর দলীয় কার্যালয়ের সামনে সংবাদ সম্মেলন করেন অপর গ্রুপের নেতাকর্মীরা। এই গ্রুপের নেতারা বলেন, সংস্কারপন্থী নেতা আহবায়ক কমিটির আহবায়ক গোলাম মোহাম্মদ সিরাজকে মেনে নেওয়া যাবে না। তাকে বাদ দিয়ে নতুন কমিটি ঘোষণা না করা পর্যন্ত কার্যালয়ে তালা থাকবে। আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।