রাজবাড়ীতে ধানের দাম না বাড়ায় ক্ষুব্ধ কৃষক
সোনালী ধানে ভরে আছে মাঠের পর মাঠ। পাকা ধানের ঘ্রাণে মৌ মৌ করছে চারিদিক। কিন্তু হাসি নেই কৃষকের মুখে। উৎপাদন খরচের সঙ্গে ধানের দামের বিরাট পার্থক্য থাকায় চরম বিপাকে পড়েছেন রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি, পাংশা, কালুখালি, গোয়ালন্দ ও সদর উপজেলার কয়েক হাজার কৃষক। অর ধানের দাম না বাড়ায় ক্ষুব্ধ তারা।
অনেক জায়গায় এক মণ ধানের দামের চেয়ে একজন শ্রমিকের মজুরি বেশি। আগামী দিনগুলো কিভাবে কাটবে, এ দুশ্চিন্তায় সময় কাটছে তাদের। তবে জেলা কৃষি অধিদফতরের কর্মকর্তারা ধান মজুদ করার পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষকদের।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, এ বছর রাজবাড়ীতে বোরো হাইব্রিড, বোরো উফশী ও বোরো স্থানীয় জাতের ধান চাষ করেছেন কৃষক। জেলার সদর উপজেলায় ৬ হাজার ৫১০ হেক্টর, পাংশা উপজেলায় ১ হাজার ৮৫ হেক্টর, কালুখালী উপজেলায় ১ হাজার ৯১০ হেক্টর, বালিয়াকান্দি উপজেলায় ৮০০ হেক্টর, গোয়ালন্দ উপজেলায় ২ হাজার ৯৫৩ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে।
এ বছর রাজবাড়ীতে মোট ১৩ হাজার ৮৬০ হেক্টর জমিতে ধানের চাষ হলেও গত বছরের চেয়ে ৫১০ হেক্টর জমিতে ধানের কম চাষ হয়েছে। গত বছর জেলায় ১৪ হাজার ৩৭০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছিল।
সদর উপজেলার বাহিবহ ইউনিয়নের কৈডাঙ্গা গ্রামের কৃষক প্রদুৎ কুমার বালা বার্তা ২৪.কমকে বলেন, ‘এ বছর আমাদের ধানের উৎপাদন ভালো হয় নাই। প্রতি পাখি (২২ শতাংশ) জমিতে ধান উৎপাদনে খরচ হচ্ছে ৭ হাজার টাকা। এবার ধানের যে দাম, তাতে যা খরচ হয়েছে তা উঠবে না। এখন আমরা ভাবছি পরিবার নিয়ে কীভাবে দিন কাটাব।’
বালিয়াকান্দি উপজেলার কৃষক আক্কাচ শেখ বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘শ্রমিকের মজুরি অত্যাধিক হবার কারণে আমাদের বিপাকে পড়তে হচ্ছে। তাছাড়া ধান রোপণের সময় থেকে কাটা পর্যন্ত কৃষি অফিসের কোনো কর্মকর্তারই সহযোগিতা পাইনি। ফলে এবার ধানের উৎপাদন অনেকটাই কমেছে।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ পরিচালক মো ফজলুর রহমান বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘এ বছর রাজবাড়ীতে ধানের ফলন ভালো হয়েছে। তবে ধানের দাম কম হওয়ায় কৃষকরা বিপাকের মধ্যে রয়েছে। ধানের কম দাম পুষিয়ে নিতে কৃষকদের নিজ দায়িত্বে ধান সংরক্ষণ করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখন ধান সংরক্ষণ করে রাখলে আগামীতে ধানের দাম বৃদ্ধি পাবে তখন কৃষকরা লাভবান হবে।’