ভোলার নৌযানগুলোতে নেয়া হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া
ভোলা-লক্ষ্মীপুর নৌরুটে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নেয়া হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরেই চলছে এ অবস্থা। এ রুটে চলাচলকারী লঞ্চ ও সি-ট্রাকগুলো ঈদকে সামনে রেখে যাত্রীদের জিম্মি করে নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে দুই থেকে তিনগুণ বেশি ভাড়া নিচ্ছে।
বিষয়টি বিআইডব্লিউটিএ আর স্থানীয় প্রশাসনের জানা থাকলেও যাত্রীদের কাছ থেকে অভিযোগ না পাওয়ার অজুহাতে চুপ রয়েছে তারা।
দক্ষিণাঞ্চল থেকে ভোলা হয়ে ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও লক্ষ্মীপুরসহ দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র রুট ভোলা-লক্ষ্মীপুর নৌরুট। প্রতিদিন এ রুট দিয়ে ফেরি, লঞ্চ এবং সি-ট্রাকের মাধ্যমে কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করছে। কিন্তু এ রুটে যাত্রীদের কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি ভাড়া আদায় করছে নৌযান কর্তৃপক্ষ।
যাত্রীরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে এ রুটে ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্য হচ্ছে। শুরুতে এ রুটে সি-ট্রাক ও লঞ্চের ভাড়া ছিল ৮০ টাকা। পরবর্তীতে ১শ এবং ১২০ টাকা ও সর্বশেষ ১৫০ টাকা করে নেয়া হচ্ছে। অথচ বিআইডব্লিউটিএর নিয়মানুযায়ী প্রতি কিলোমিটার ১ টাকা ৭০ পয়সা হারে ইলিশা থেকে মজুচৌধুরীর হাটের ২৬ কিলোমিটার দূরত্বের ভাড়া হওয়ার কথা ছিল ৪৫ টাকা। কিন্তু কোনো প্রকার কারণ ছাড়াই কয়েক গুণ বেশি ভাড়া নেয়া হচ্ছে।
চট্টগ্রাম থেকে লঞ্চে আসা যাত্রী নয়ন বলেন, ‘মজুচৌধুরীর হাট থেকে ইলিশা এসেছি। আমার কাছ থেকে ১৬০ টাকা ভাড়া নিয়েছে। অথচ এখান থেকে ঢাকার ভাড়াও ১৬০ টাকা।’
লঞ্চের আরেক যাত্রী বিল্লাল জানান, ইলিশা থেকে মজুচৌধুরীর হাট ২৬ মাইল। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ভাড়া হয় ৪৫ টাকা। অথচ নেয় দেড়শ-দুইশ টাকা।
বিআইডব্লিউটিএর পরিবহন পরিদর্শক মো. নাসিম আহমেদ জানান, সরকারি হিসাব মতে এ রুটে ভাড়া ৪৫ টাকার বেশি হওয়ার কথা না। তারপরও স্থানীয় প্রশাসন ভাড়া ১২০ টাকা নির্ধারণ করেছে। কিন্তু লঞ্চ ও সি-ট্রাকের মালিকরা তাও মানছে না।
তবে তিনি জানিয়েছেন, যাত্রীদের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ভোলার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক জানান, সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি ভাড়া নেয়ার অভিযোগে ইতোমধ্যে কয়েকটি নৌযানের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ভবিষ্যতেও কেউ অতিরিক্ত ভাড়া নিলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে ভেদুরিয়া-লাহারহাট ফেরিসহ অন্যান্য নৌযানগুলোতেও অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। ভোলা থেকে দেশের অন্য কোনো জেলায় যেতে হলে নৌপথ ছাড়া বিকল্প ব্যবস্থা নেই। তাই অনেকটা বাধ্য হয়েই চলাচল করতে হয় যাত্রীদের।