ইউপি চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে দোকান লুটপাট, অগ্নিসংযোগ

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নোয়াখালী
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

লুটপাটের পর পুড়িয়ে দেওয়া দোকান/ ছবি: বার্তা২৪.কম

লুটপাটের পর পুড়িয়ে দেওয়া দোকান/ ছবি: বার্তা২৪.কম

নোয়াখালী সদর উপজেলার ১৯ নং পূর্বচরমটুয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নুরুল আলম ও তার বাহিনী স্থানীয় এক বাসিন্দার পাঁচটি দোকানে অগ্নিসংযোগ, মালামাল লুটপাট ও হামলা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন তিন জন।

বৃহস্পতিবার (৬ জুন) দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে নোয়াখালীর ২০ নং আন্ডারচর ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডে এ অগ্নিসংযোগ ও হামলার ঘটনা ঘটে।

বিজ্ঞাপন

স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, রাত সাড়ে ১১টার দিকে হঠাৎ এলোপাতাড়ি গুলির শব্দ শুনতে পান তারা। অনেকে কাছে গিয়ে দেখার চেষ্টা করলেও হামলাকারীদের ভয়ে সামনে যেতে পারেনি। ঘণ্টা খানেক পরে গিয়ে পাঁচটি দোকান আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে দেখতে পান। একটি জিনিসও দোকানে অবশিষ্ট ছিল না তখন।

প্রত্যক্ষদর্শী শাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘এলোপাতাড়ি গুলি করে হামলাকারীরা প্রথমে মার্কেট দখলে নেয়। পরে দোকানগুলো থেকে মালামাল গাড়ি করে নিয়ে যায় এবং শেষে আগুন লাগিয়ে দিয়ে যায়।’

বিজ্ঞাপন

এদিকে এ হামলাকে ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আলমের নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা বলছেন পুড়িয়ে দেওয়া দোকানের স্বত্বাধিকারী আবুল কাশেম। তিনি বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘এর আগেও এই চেয়ারম্যান কয়েক দফা তার নিজের ইউনিয়ন চরমটুয়ায় দোকানে হামলা, লুটপাট ও অগ্নি-সংযোগের ঘটনা ঘটিয়েছেন।’

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/07/1559907546683.jpg

আবুল কাশেম বলেন, ‘আমার তিনটি কনফেকশনারি দোকান, একটি মুদি দোকান ও একটি ফার্মেসি দোকান সম্পূর্ণ পুড়ে ছাই করে দিয়েছে। পোড়ার আগে সব মাল লুট করে নিয়ে যায়। সবমিলিয়ে পঁচিশ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। পরিবার নিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেলাম।’

এ ঘটনায় আহত জসিম বলেন, ‘ধরজা বন্ধ করে ভয়ে লুকিয়ে ছিলাম। পরে আমাকে ধরজা ভেঙে পেয়েছি বলে চিৎকার দিয়ে টেনে রাস্তায় নিয়ে মারতে থাকে। কোনো মতে প্রাণে রক্ষা পেয়েছি।’

এদিকে চেয়ারম্যানের সাথে পুলিশ থাকারও অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা। তাদের দাবি, পুলিশের উপস্থিতিতে এ অগ্নিকাণ্ড ও লুটে নেতৃত্ব দিয়েছেন চেয়ারম্যান নুরুল আলম। তার সাথে ছিলেন চেয়ারম্যানের ছোট ভাই মোরশেদ আলম, এলাকায় ইয়াবা শহীদ নামে খ্যাত শহীদ হোসেন, সাজাপ্রাপ্ত শিপন, স্থানীয় রিমন, বাদশা মিয়া, তোফায়েল, হারুন, সুমন, বেলাল, পারবেজ, রাজু, হানিফ, ফারুক প্রমুখ।

অগ্নিসংযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আলম বলেন, ‘আমাকে হত্যা করার পরিকল্পনা কষছিলেন এরা। তাই আমার পোলাপান এ কাজ করেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নোয়াখালী সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ারুল আজীম বলেন, ‘ঘটনার খবর শুনে তিন পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে যান এবং তারা গিয়ে আগুন নেভানো অবস্থায় পান।’

অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের সময় পুলিশের উপস্থিতির অভিযোগ অস্বীকার করেন ওসি আনোয়ারুল আজীম। তিনি বলেন, ‘অগ্নিসংযোগের পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।’