চুড়ি খেলাও ব্যবসার উপাদান
গ্রামের ঐতিহ্যবাহী খেলার মধ্যে চুড়ি খেলা অন্যতম। এক সময় গ্রামের মোড়ে মোড়ে এই খেলায় মেতে উঠত শিশুরা। বাদ যেত না যুবক থেকে বৃদ্ধরাও। কিন্তু এই খেলাটি এখন আর তেমন চোখে পড়ছে না। তবে খেলাটি এখন ব্যবসার উপাদান হিসেবে কাজ করছে।
এই চুড়ি খেলাকে ব্যবসার উপাদান হিসেবে ব্যবহার করতে দেখা গেছে লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার মাতাব্বরহাট এলাকায়। সেখানে মেঘনারপাড়ে ঘুরতে আসা মানুষকে আকর্ষণ করা হচ্ছে চুড়ি খেলা দিয়ে। চুড়ি খেলায় জিতলেই দেওয়া হচ্ছে একটি কোমল পানীয়।
আর এই খেলাটি বা ব্যবসাটি করতে দেখা গেছে স্থানীয় বাসিন্দা ১৪ বছর বয়সী দেলোয়ার হোসেনকে। এসময় তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, খেলায় একবার অংশগ্রহণ করতে ৫ টাকা দিতে হয় আগ্রহীদের।
এ খেলার নিয়ম হচ্ছে- অংশগ্রহণকারী একটি চুড়ি দূর থেকে ১৫ টাকা দামের একটি কোমল পানীয়-এর বোতলের মুখে ফেলবে। আর ফেলতে পারলে ওই কোমল পানীয়-এর বোতলটি তার হয়ে যাবে।
সরেজমিনে দেখা যায়, একটি লাঠির মাথায় লম্বা সুতায় বাঁধা চুড়ি নিয়ে সবাইকে খেলায় অংশগ্রহণ করতে ডাকছে দেলোয়ার। প্রতিবারে ৫ টাকা করে দিয়ে খেলায় অংশগ্রহণ করতে হচ্ছে। এসময় কয়েকজন যুবক খেলায় অংশগ্রহণ করেও জিততে পারেনি৷ তবে তারা খেলাটি বেশ উপভোগ করেছেন বলে জানিয়েছেন।
জানা গেছে, আগে চুড়ি খেলা গ্রামের ঐতিহ্য বহন করলেও এখন আর নেই। এখন শুধু দেশের বিভিন্ন জায়গায় অনুষ্ঠিত হওয়া মেলা, পর্যটন কেন্দ্র ও মানুষের সমাগম স্থলে এর দেখা মেলে। তবে শুধু খেলা হিসেবে নয়, এটি এখন ব্যবসার উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
এ বিষয়ে দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘বিকেলে মাতাব্বর হাট এলাকায় মেঘনা নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে অনেক মানুষ আসে। এ সময় কোমল পানীয় বিক্রি করতে আসি। কিন্তু মানুষ কম কিনে। এ কারণে ব্যবসা করতে চুড়ি খেলাকে উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। কোমল পানীয়-এর চেয়ে তারা খেলার জন্য বেশি আসে। এতে আমারও লাভ হয়। খেলায় অংশগ্রহণ করে মানুষও আনন্দ পায়। ঈদ ছুটিতে মানুষ বেশি হওয়ায় আমার ব্যবসাও ভালো চলছে।’