স্কুলছাত্রীর গায়ে আগুন: পরিবারের নিরাপত্তায় পাহারায় ওসি

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজবাড়ী
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ভুক্তভোগী ছাত্রীর পরিবারের নিরাপত্তায় রাতভর পাহারায় রাজবাড়ী সদর থানার পুলিশ/ ছবি: বার্তা২৪.কম

ভুক্তভোগী ছাত্রীর পরিবারের নিরাপত্তায় রাতভর পাহারায় রাজবাড়ী সদর থানার পুলিশ/ ছবি: বার্তা২৪.কম

রাজবাড়ীর সদর উপজেলার পাচুরিয়া ইউনিয়নের খোলাবাড়িয়া গ্রামে ১০ম শ্রেণীর এক স্কুলছাত্রীকে গায়ে কেরোসিন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা চেষ্টা মামলার পর ঐ ছাত্রী ও তার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজেই রাতভর পাহারায় ছিলেন।

এ সময় ওসি স্বপন কুমার মজুমদারের সাথে থানার সঙ্গীয় ফোর্স ছিল। সদর থানা পুলিশ প্রশাসন বলছে, মেয়েটি ও তার পরিবারকে নিরাপত্তা দিতে পুলিশ সুপারের কড়া নির্দেশ রয়েছে। আসামিরা যাতে কোনো ধরনের হয়রানি না করতে পারে তাই সারা রাত পুলিশ ঐ ছাত্রীর বাড়ির সামনে নিরাপত্তায় নিয়োজিত ছিল।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে ওসি স্বপন কুমার মজুমদার বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘রাজবাড়ীতে যাতে ফেনীর নুসরাতের মতো অঘটন না ঘটে সেজন্য পুলিশ সুপারের নির্দেশে সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে মেয়েটির বাড়িতে অবস্থান করি। মেয়েটি ও তার পরিবারকে নিরাপত্তা দিতে যা কিছু করণীয়, আমরা তা করব।’

মামলার বাদী স্কুলছাত্রীর বাবা ফজলুর রহমান বার্তা২৪.কম-কে জানান, ঘটনাটি ঘটার পর তার ছেলে ফেসবুকে নিরাপত্তাহীনতার কথা তুলে একটি পোস্ট দিলে শনিবার (৮ জুন) সদর থানার ওসি তাদেরকে থানায় ডেকে নিয়ে একটি মামলা দায়ের করান। তারপর রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার তাদের বাড়িতে যান। তাদের যাতে কোনো ধরনের সমস্যা না হয় সেজন্য সদর থানার ওসি নিজেই সারা রাত তাদের বাড়িতে অবস্থান করেন।

বিজ্ঞাপন
https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/09/1560048368280.jpg
ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাড়িতে পুলিশ সুপার আসমা সিদ্দিকা মিলি/ ছবি: সংগৃহীত

 

রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার আসমা সিদ্দিকা মিলি বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘মেয়েটি ও তার পরিবারকে নিরাপত্তা দিতে পুলিশ বদ্ধপরিকর। তাদের যাতে কোনো ধরনের কোন সমস্যা না হয় সেদিকে নজর রাখছি। আমরা চাই না নুসরাতের মতো আরেকটি মর্মান্তিক ও দু:খজনক ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটুক। পরিবারের নিরাপত্তার পাশাপাশি পুলিশের দুটি টিম আসামি ধরতে মাঠে কাজ করছে। আসামিদের ধরার পর ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন করা হবে।’

প্রসঙ্গত, গত ৪ জুন রাজবাড়ী সদরের পাচুরিয়া ইউনিয়নের খোলাবাড়িয়া গ্রামে খানখানাপুর তমিজ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর অন্য ছেলের সাথে কিছু আপত্তিকর ছবি ইন্টারনেটে ফাঁস করার কথা বলে স্থানীয় বাসিন্দা শিল্পী বেগম ঐ ছাত্রীর পরিবারের কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন।

চাঁদা না দেওয়ায় পরের দিন বোরখা পরিহিত চারজন ব্যক্তি ঐ ছাত্রীকে তাকে জিম্মি করে পাশের পাটক্ষেতে নিয়ে গিয়ে হাত-পা-মুখ বেঁধে শারীরিক আঘাত করে গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। তারই প্রেক্ষিতে ঐ ছাত্রীর বড় ভাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সোহেল তার ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেয়।

বিষয়টি সদর থানার ওসি স্বপন কুমার মজুমদারের নজরে আসলে পুলিশ ঐ ছাত্রীর বড় ভাই ও বাবাকে থানায় ডেকে নিয়ে শনিবার (৮ জুন) একটি এজাহার দায়ের করান।