ছুটি শেষে ফের কর্মব্যস্ত বেনাপোল বন্দর

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বেনাপোল (যশোর)
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

পবিত্র ঈদুল ফিতরের সাত দিনের ছুটি শেষে বেনাপোল বন্দরে আবারো কর্মচাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। প্রয়োজনীয় পণ্য খালাসে ব্যস্ত সময় পার করছেন বাণিজ্যের সাথে সংশিষ্ট মানুষেরা।

বন্দর সূত্র জানায়, পবিত্র শবেকদর ও ঈদ উপলক্ষে গত রোববার (২ জুন) থেকে শুক্রবার (৭ জুন) পর্যন্ত বেনাপোল বন্দরে আমদানি-রফতানি ও পণ্য খালাস কার্যক্রম বন্ধ ছিল। গত শনিবার (৮ জুন) অফিস খুললেও ঈদের আমেজ না কাটায় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মব্যস্ততা আসেনি। সোমবার (১০ জুন) থেকে বন্দরের কার্যক্রমে স্বাভাবিক গতি ফিরে আসে।

বিজ্ঞাপন

বেনাপোল কাস্টমসের সহকারী কমিশনার উত্তম চাকমা বার্তা২৪.কমকে জানান, বর্তমানে বেনাপোল বন্দরে সপ্তাহে ছয় দিনে ২৪ ঘণ্টা করে আমদানি ও রফতানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। ঈদের ছুটি শেষে এখন বাণিজ্যিক ব্যস্ততা বেড়েছে। অফিসের প্রতিটা দফতরে কর্মকর্তা, কর্মচারীরা পণ্য খালাসে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

সোমবার (১০ জুন) দুপুরে বেনাপোল বন্দর এলাকা ঘুরে পণ্য খালাসে ব্যবসায়ীদের মধ্যে ব্যস্ততা লক্ষ্য করা যায়। জানা যায়, এক দিনে আমদানি পণ্য থেকে সরকারের রাজস্ব আয় হয়েছে ১৮ কোটি ১১ লাখ টাকা।

বিজ্ঞাপন

বেনাপোল আমদানি, রফতানি ব্যবসায়ী সমিতির যুগ্ম সম্পাদক মহাসিন মিলন বার্তা২৪.কমকে জানান, এবার ঈদুল ফিতরের আগে ও পরে মিলে একটানা সাত দিনের বন্ধের কবলে পড়েছিল বেনাপোল বন্দর। এতে ব্যবসায়ীরা পণ্য খালাস নিতে পারেননি। তাই ঈদের ছুটি শেষে এখন সব ব্যবসায়ী প্রয়োজনীয় পণ্য খালাস নিচ্ছেন। এতে সরকারের রাজস্ব আয় বেড়েছে।

বেনাপোল বন্দর পরিচালক (ট্রাফিক) প্রদোষ কান্তি দাস বার্তা২৪.কমকে বলেন, সরকারি ছুটি শেষে অফিস খুলেছে। কর্মকর্তা, কর্মচারী যারা ছুটিতে বাড়িতে গিয়েছিলেন, সবাই কর্মস্থলে ফিরে কাজে যোগ দিয়েছেন। ব্যবসায়ীরা যাতে বন্দর থেকে দ্রুত তাদের প্রয়োজনীয় পণ্য খালাস নিতে পারেন, তার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে সব ধরনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

Benapol Port

বেনাপোল বন্দর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রাজু আহম্মেদ জানান, একটানা প্রায় সাত দিন বন্দর বন্ধের কবলে পড়ায় বন্দরে পণ্য খালাসে নিযুক্ত দিন আনা দিন খাওয়া শ্রমিকেরা অনেকটা অর্থকষ্টের মধ্যে পড়েছিলেন।এখন বন্দরে কর্মব্যস্ততা ফিরে আসায় তাদের মধ্যে যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছেন। আনন্দ নিয়ে তারা পণ্য খালাস করছেন।

সরকারের রাজস্ব গ্রহণকারী বেনাপোল সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার এআরএম রকিবুল হাসান বার্তা২৪.কমকে জানান, রোববার (৯ জুন) বেনাপোল বন্দরে আমদানি পণ্য থেকে সরকারের কোষাগারে ১৮ কোটি ২৬ লাখ টাকা রাজস্ব জমা পড়েছে, যা অনান্য সময়ের চাইতে দ্বিগুণ।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, ঈদের ছুটি শেষে বন্দর থেকে পণ্য খালাসের চাপ অনান্য সময়ের চেয়ে একটু বেশি। খালাসকৃত পণ্যের মধ্যে রয়েছে- শিল্পকাখানায় ব্যবহৃত মেশিনারিজ যন্ত্রাংশ, কাচামাল ও খাদ্যদ্রব সামগ্রী। রফতানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে- পাট ও পাট জাত দ্রব, মাছ, গার্মেন্টস সামগ্রী ও কেমিকেলসহ বিভিন্ন পণ্য।

উল্লেখ্য, দেশে ২৩টি স্থলবন্দরের মধ্যে চলমান ১৩ বন্দরের সবচেয়ে বড় আর বেশি রাজস্ব দাতা বেনাপোল বন্দরের কাস্টমস হাউজ। ১৯৭২ সাল থেকে এ পথে ভারতের সাথে বাণিজ্যিক যাত্রা শুরু। প্রতিবছর এ বন্দর দিয়ে প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকার পণ্য আমদানি হয়ে থাকে, যা থেকে সরকারের প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়। বন্দরে আমদানি পণ্যের ধারণ ক্ষমতা ৪২ হাজার মেট্রিক টন কিন্তু এখানে সার্বক্ষণিক পণ্য থাকে প্রায় দেড় লাখ মেট্রিক টন। বর্তমানে বন্দরে ২৮টি পণ্যাগার, আটটি ওপেন ইয়ার্ড, একটি ভারতীয় ট্রাক টার্মিনাল, একটি রফতানি ট্রাক টার্মিনাল ও একটি ট্রান্সশিপমেন্ট ইয়ার্ডের মাধ্যমে বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে; তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম।