আম পাঠাতে কুরিয়ারে ভিড় চাঁপাইয়ে
এই সময়ের বাজার মানেই খিরসাপাত, গোপালভোগ ও ল্যাংড়াসহ সুস্বাদু নানান আমের মৌ মৌ গন্ধে ভরপুর। আর আম মানেই চাঁপাইনবাবগঞ্জ। সারাদেশের আমপ্রিয় মানুষ অপেক্ষায় থাকে কখন চাঁপাইয়ের আম পাকবে। সেই আম বাজারে ওঠার আগে চাঁপাইয়ে চলে বুকিং বাণিজ্য। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষজন পরিচিত ব্যক্তি, আত্মীয়-স্বজন, আমচাষি কিংবা বিক্রেতাদের মাধ্যমে আমের অর্ডার দিয়ে রাখেন।
বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দফতরের কর্মকর্তারা-কর্মচারীরা তাদের ঊর্ধ্বতনদের খুশি করতেও দেশের বিভিন্ন স্থানে আম পাঠিয়ে থাকেন। বিভিন্ন মাধ্যমে আমের দাম পরিশোধের পর সেই আম কুরিয়ার মারফত পাঠানো হয় দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে। জেলার বাইরে থাকা আত্মীয়স্বজনদের কাছে আম পাঠান স্থানীয়রা।
তাই কেবল বিক্রেতারাই নন, আমকে ঘিরে চাঁপাইয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কুরিয়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। চাঁপাইনবাবগঞ্জে অর্ধশতাধিক কুরিয়ার সার্ভিস বিভিন্ন গন্তব্যে আম পাঠাচ্ছে। তবে কুরিয়ার সার্ভিসগুলোর বিরুদ্ধে সার্ভিস চার্জ ইচ্ছেমত নেয়ার অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। আবার কোন কোন কুরিয়ার সার্ভিসের বিরুদ্ধে আম গায়েব করারও অভিযোগ করেছেন অনেকে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের এসএ পরিবহন, সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিস, আহমদ পার্সেল সার্ভিস, করতোয়া, জননী, কন্টিনেন্টাল, এসআর, এজেআর কুরিয়ার, এমটি কুরিয়ার সার্ভিসের অফিসে সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, আম পাঠাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। আত্মীয়-স্বজনসহ বিভিন্ন ধরনের ক্রেতাদের কাছে আম পাঠাতে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে বুকিং দিচ্ছেন তারা।
খুলনায় আম পাঠানোর জন্য জননী কুরিয়ার সার্ভিসে ঘণ্টাখানেক ধরে অপেক্ষা করছেন সৌরভ আলী। তিনি বলেন, প্রতি বছর আমের মৌসুম এলেই বিভিন্ন স্থান থেকে আমের জন্য ফোন আসে। কাউকে ফ্রি, আবার কাউকে টাকা নিয়ে আম পাঠাতে হয়।
কানসাট এলাকার নাসিমা বেগম জানান, ফরিদপুরে একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতাম। সে সুবাদে বিভিন্নজনের সঙ্গে পরিচিত বাড়ে। অনেকে আম চেয়ে ফোন করেন। তাদের কথা রাখতে কুরিয়ারে আম পাঠাতে এসেছি। তবে আমের চাইতে কুরিয়ার খরচ বেশি। ২০ কেজি আম পাঠাতে প্রায় সাড়ে তিনশ’ টাকা খরচ হল।
সংশ্লিষ্টদের তথ্যমতে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে সরাসরি রাজধানীতে আম পাঠাতে প্রতি কেজিতে তারা সার্ভিস চার্জ নিচ্ছেন ১০-১৩ টাকা এবং রাজধানীর বাইরে ১৭ টাকা। অর্ধশতাধিক কুরিয়ার তাদের নিজস্ব পরিবহনে বিভিন্ন গন্তব্যে আম পাটাচ্ছে। জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে প্রায় দুই শতাধিক কুরিয়ারের গাড়ি বিভিন্ন গন্তব্যের দিকে ছুটে যাচ্ছে প্রতিদিন।