নানা আয়োজনে কবি রুদ্রের মৃত্যুবার্ষিকী পালিত
নানা আয়োজনের মধ্যে দিয়ে তারুণ্যের কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর ২৮তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে।
শুক্রবার (২১ জুন) কবির নিজ গ্রামের বাড়ি বাগেরহাটের মোংলার মিঠাখালী গ্রামে রুদ্র স্মৃতি সংসদসহ নানা সংগঠন দিবসটি পালন করে।
মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার (২১ জুন) সকাল ৯টায় রুদ্র স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে সংসদ চত্বর থেকে বের হওয়া শোভাযাত্রায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিসহ নানা শ্রেণী পেশার বিপুল সংখ্যক লোকজন অংশ নেন।
কবির মৃত্যুদিন উপলক্ষে শুক্রবার সন্ধ্যায় সংসদ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত স্মরণ সভায় সভাপতিত্ব করেন সংসদের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সভাপতি মাহামুদ হাসান। বক্তব্য রাখেন, মোংলা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: ইকবাল বাহার চৌধুরী, মোংলা উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের মোংলা শাখার আহ্বায়ক নূর আলম শেখ, মোংলা বন্দর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক আফজাল হোসেন, রুদ্র স্মৃতি সংসদের সভাপতি সুমেল সারাফাত, মিঠেখালি ১ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবুল হোসেন ও কমিউনিস্ট পার্টি মোংলা শাখার সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হকসহ অন্যান্যরা।
সভায় বক্তারা বলেন, ‘চারিদিকে সাম্প্রদায়িকতার ছোবলে দেশ যখন ভীত-সন্ত্রস্ত, তখন রুদ্রকে আমাদের খুব প্রয়োজন ছিল। তিনি ছিলেন তারুণ্য ও সংগ্রামের দীপ্ত প্রতীক। সমাজের সকল বৈষম্য, সাম্প্রদায়িকতা ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে তিনি কলম ধরেছেন। শুধু লেখায় নয়, স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন-সংগ্রামে রুদ্র রাজপথের সামনের কাতারের যোদ্ধা ছিলেন। তাই দেশ ও জাতির সংকটে রুদ্রের কবিতা হয়ে উঠেছে তারুণ্যের হাতিয়ার। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন রুদ্র তার কবিতা, গান নিয়ে বেঁচে থাকবেন। এ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন রুদ্র স্মৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান টিটো।'
আলোচনা শেষে রুদ্রের গান পরিবেশন করেন রুদ্রের গড়া সংগঠন অন্তর বাজাও ও জীবন। রুদ্রের কবিতা আবৃত্তি করেন সুমেল সারাফাত ও জানে আলম শেখ।
প্রসঙ্গত, মাত্র ৩৫ বছরের জীবন-সীমায় রুদ্র রচনা করেন সাতটি কাব্যগ্রন্থ ‘উপদ্রুত উপকূল’ (১৯৭৯), ‘ফিরে চাই স্বর্ণগ্রাম’ (১৯৮১), ‘মানুষের মানচিত্র’(১৯৮৪), ‘ছোবল’ (১৯৮৭), ‘গল্প’ (১৯৮৭) ‘দিয়েছিলে সকল আকাশ’ (১৯৮৮) এবং ‘মৌলিক মুখোশ’(১৯৯০)।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও পরবর্তী পরিস্থিতিকে অবলম্বন করে তিনি ‘বিষ বিরিক্ষের বীজ’ নামে একটি কাব্যনাট্যও রচনা করেন। এছাড়া তিনি বেশ কিছু গল্প লিখে গেছেন। ১৯৯১ সালের ২১ জুন মাত্র ৩৫ বছর বয়সে কবি রুদ্র শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।