বঙ্গবন্ধুর মাজার জিয়ারত করতে পদযাত্রী রফিকুল এখন বগুড়ায়
রফিকুল ইসলাম (৫৯)। পেশায় রিকশা চালক। বাড়ি রংপুর শহরের তাজহাট উত্তর বাবুপাড়ায়। ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শোনার পর থেকেই তার ভক্ত হয়ে যান রফিকুল। আর তখন থেকেই রফিকুল ইসলাম বঙ্গবন্ধুর আদর্শ হৃদয়ে লালন করতে থাকেন।
জাতীর জন্য বঙ্গবন্ধুর ত্যাগ ও কষ্টের কথা স্মরণ করে রফিকুল ইসলাম পায়ে হেঁটে টুঙ্গীপাড়ার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছেন। সেখানে তিনি জাতির জনকের মাজার জিয়ারত করে পায়ে হেঁটে ঢাকার গণভবনে যাবেন। এই পদযাত্রার অংশ হিসেবে বগুড়া জেলায় অবস্থান করেছেন তিনি।
রোববার (২৩ জুন) সকাল ৯টায় রফিকুল ইসলাম বগুড়া সার্কিট হাউজ থেকে আবারো পদযাত্রা শুরু করেছেন। তিনি বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলায় পৌঁছে সেখানে রাতযাপন করবেন। এর আগে ২১ জুন রাতে বগুড়ায় পৌঁছে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি।
রফিকুল ইসলাম গত ১৩ জুন রংপুর জেলা প্রশাসকের অনুমতিপত্র নিয়ে পদযাত্রা শুরু করেন। গত কয়েকদিনে মিঠাপুকুর, পীরগঞ্জ, পলাশবাড়ি, গোবিন্দগঞ্জ অতিক্রম করে ২১ জুন বগুড়ায় পৌঁছান তিনি।
জানা গেছে, ২০১৬ সাল থেকে স্বশিক্ষিত রফিকুল ইসলাম শখ করে বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ছবি অঙ্কন করতে শুরু করেন। পাশাপাশি নিজ উদ্যোগে কৃষ্ণচূড়া গাছের চারা রোপণ করেন। ২০১৬ সালের ১৬ ডিসেম্বর থেকে সরকারি অফিস এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ পর্যন্ত শতাধিক বঙ্গবন্ধুর ছবি অঙ্কন করেছেন তিনি। পাশাপাশি ৪ শতাধিক কৃষ্ণচূড়া গাছের চারা রোপণ করেছেন।
রফিকুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে জানান, ১৯৮০ সাল থেকে রংপুর শহরে রিকশা চালান তিনি।
নিজেকে বঙ্গবন্ধুর সৈনিক দাবি করে রফিকুল ইসলাম জানান, ১৯৯০ সালে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়ে পুলিশের নির্যাতনের শিকার হন। ১৯৮৫ সাল থেকে বঙ্গবন্ধুর ছবি আঁকতে চেষ্টা করেন। এক সময় সফল হন তিনি। ২০১৬ সালের ১৬ ডিসেম্বর রংপুর শহরের তাজহাট বাবুপাড়া বটতলায় দেয়ালে বঙ্গবন্ধুর ছবি অঙ্কন করে সবার নজরে আসেন। এরপর থেকে বিভিন্ন স্থানে একের পর এক ছবি অঙ্কন করছেন তিনি।
রফিকুল ইসলাম জানান, ছোট বেলা থেকেই তার হাঁটাহাঁটি করার অভ্যাস ছিল। ১৯৯০ সালে একবার যানবাহন না পেয়ে পাটগ্রাম থেকে লালমনিরহাট পর্যন্ত ৫০ কিলোমিটার পথ পাঁয়ে হেটে এসেছিলেন। এরপর আর দীর্ঘ পথ পায়ে হাঁটা হয়নি।
২০১৬ সালের ১৬ ডিসেম্বর তিনি চিন্তা করেন বঙ্গবন্ধু দেশ ও জাতীর জন্য এতো কষ্ট করেছেন, জেল খেটেছেন, তার ঋণ শোধ করার মতো নয়। তাই তিনি সিদ্ধান্ত নেন পায়ে হেঁটে টুঙ্গিপাড়ায় গিয়ে বঙ্গবন্ধুর মাজার জিয়ারত করবেন। আর ওই চিন্তা থেকেই পদযাত্রা শুরু করেন তিনি।
বগুড়া থেকে রওনা হয়ে শেরপুর, সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ, উল্লাপাড়া, শাহজাদপুর, পাবনার বেড়া, সাথিয়া, সুজানগর হয়ে পদ্মা নদী পাড়ি দিয়ে তিনি পৌঁছাবেন রাজবাড়ি জেলায়। আগামী ১৯ জুলাই টুঙ্গিপাড়া পৌঁছাবেন রফিকুল ইসলাম।