ক্ষমা চাইলেন ধূমপায়ী ম্যাজিস্ট্রেট
ধূমপানে বাধা দেওয়ায় একজন চিকিৎসককে লাঞ্ছিত করার মাশুলবাবদ ক্ষমা চাইলেন মৌলভীবাজার সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুনজিৎ কুমার চন্দ। আন্দোলন ও প্রতিবাদের মুখে কর্মস্থল মৌলভীবাজার থেকে কিশোরগঞ্জে এসে কৃতকর্মের জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করতে হলো এই দুর্বিনীত সরকারি কর্মচারীকে।
ঘটনার সূত্রপাত গত ২১ জুন। জয়ন্তিকা ট্রেনে করে সিলেট যাচ্ছিলেন কিশোরগঞ্জ রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. রফিউল সিরাজ। এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুনজিৎ কুমার চন্দ ট্রেনের ভেতর ধূমপান করলে প্রতিবাদ করেন ডা. সিরাজ। পরের স্টেশনে ম্যাজিস্ট্রেট পুলিশ ডেকে ট্রেন থেকে টেনে-হিঁচড়ে নামিয়ে ডা. সিরাজকে মারধর করান। বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমে সংবাদটি ছাপা হয়।
বিস্তারিত দেখুন: ধূমপানে বাধা দেওয়ায় ডাক্তারকে পেটালেন এসিল্যান্ড!
চলন্ত ট্রেনে ধূমপানে বাধা দেওয়ায় রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ মেডিকেল কলেজের ডাক্তারকে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে ওই ম্যাজিস্ট্রেটের বিচার দাবিতে গত কয়েক দিন ধরে কিশোরগঞ্জে কর্মসূচি পালন করছিল চিকিৎসদের বিভিন্ন সংগঠন। প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরেও অভিযুক্ত ম্যাজিস্ট্রেটের শাস্তির দাবি জানানো হয়।
অবশেষে মৌলভীবাজারের ধূমপায়ী ম্যাজিস্ট্রেট কিশোরগঞ্জে এসে ক্ষমা প্রার্থনার মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের শান্ত করেন। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ মেডিকেল কলেজ হাসপতালের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. আ. ন. ম নওশাদ খান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, 'আমাদের ডাক্তারকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় আমরা আন্দোলন করছিলাম। এ পরিস্থিতিতে কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক অভিযুক্ত ম্যাজিস্ট্রেটকে সঙ্গে নিয়ে মেডিকেলে আসেন। দীর্ঘ সময় এ নিয়ে কথা হয়। ওই ম্যাজিস্ট্রেট নিজের ভুল বুঝতে পেরে লাঞ্ছনার শিকার ডাক্তারের কাছে ক্ষমা চান। সবার কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন। তাই সার্বিক দিক বিবেচনা করে বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়।'
জানা যায়, রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষের কক্ষে কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী, কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. আ. ন. ম নওশাদ খান, জেলা বিএমএ’র সভাপতি ডা. মাহবুব ইকবাল, সাধারণ সম্পাদক ডা. আব্দুল ওয়াহাব বাদল, সিভিল সার্জন ডা. মো. হবিবুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহ আজিজুল হক পিপিসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুনজিৎ কুমার চন্দ তার আচরণের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন এবং রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ মেডিকেল কলেজের ডা. রাফিউল সিরাজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে ক্ষমা চান।