পদ্মার ভাঙনে কয়েকশ বিঘা ফসলি জমি বিলীন
পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দেখা দিয়েছে ভাঙন। ইতোমধ্যে রাজবাড়ীর সদর ও গোয়ালন্দ উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামে তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে । ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে কয়েকশ বিঘা ফসলি জমি।
সরেজমিনে দেখা যায়, উজান থেকে নেমে আসা পানির কারণে পদ্মায় তীব্র স্রোত সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে ভাঙনের তীব্রতা বাড়ছে। নদী ভাঙনে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ফসলি জমি। এতে কৃষকের স্বপ্ন ভাঙছে।
পাশাপাশি সদর উপজেলার মিজানপুর ও বরাট এবং গোয়ালন্দ উপজেলার ছোটভাকলা, দেবগ্রাম ও দৌলতদিয়া ইউনিয়নের পদ্মা পাড়ের মানুষের ঘর-বাড়িও হুমকির মধ্যে রয়েছে। তাই নদী তীরবর্তী বাসিন্দারা তাদের বাড়ি-ঘর সরিয়ে নিচ্ছে।
দেবগ্রাম ইউনিয়নের কাউজানা গ্রামের কৃষক আব্দুস সাত্তার শেখ জানান, কয়েকদিন আগে পদ্মার ভাঙনে তার ৫০ বিঘা জমির পাট ও বেগুনের ক্ষেত নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এখন তিনি নিঃস্ব।
সদর উপজেলার চর-সিলিমপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. রাজ্জাক জানান, ভাঙন রোধে সরকার যেভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে, রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ সেভাবে কাজ করছে না। নদী ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য যে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে তা খুবই ধীরগতিতে। এভাবে কাজ চললে তারা নদীর ভাঙনে শেষ হয়ে যাবেন।
গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শিকদার মো. মোহায়মেন আক্তার জানান, গত বছর প্রায় ২৫০ বিঘা কৃষি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এবারো বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই যেভাবে ভাঙন শুরু হয়েছে, তাতে কী পরিমাণ কৃষি জমির ক্ষয়-ক্ষতি হবে তা বর্ষা মৌসুম শেষে বোঝা যাবে।
রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান নির্বাহী মো. শফিকুল ইসলাম শেখ বলেন, ‘ভাঙনরোধে এরই মধ্যে আমরা ৮ কিলোমিটার অংশে স্থায়ী ও জরুরি ভিত্তিতে কাজ শুরু করেছি। এছাড়া আরও ১৭ কিলোমিটারের জন্য ডিপিপির কাজ চলছে।
রাজবাড়ী জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম বলেন, ‘আমি সবেমাত্র রাজবাড়ীতে যোগদান করেছি। এখানে এসে জানতে পারি রাজবাড়ীর মানুষ নদী ভাঙনের শিকার। এ জেলার ৮৫ কিলোমিটারের মধ্যে প্রায় ৩০ কিলোমিটারেই ভাঙনের ঝুঁকি রয়েছে। এরই মধ্যে আমি নদী ভাঙন এলাকাগুলো পরিদর্শন শুরু করেছি। নদী ভাঙনরোধে আমি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করব।’