নারায়ণগঞ্জে আবারো আলোচনায় হকার ইস্যু
নারায়ণগঞ্জ শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কে হকার উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে আবারো সংগঠিত হতে শুরু করেছেন হকাররা। হকারদের অন্যত্র বসার সুযোগ থাকা স্বত্ত্বেও জোড়পূর্বক বঙ্গবন্ধু সড়কে বসতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন হকার নেতারা।
আর এই চেষ্টায় সঙ্গী হিসেবে পেয়েছেন বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি নারায়ণগঞ্জ শাখার সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম গোলক ও বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টির সাধারণ সম্পাদক আবু হাসান টিপুকে।
২০১৮ সালে একইভাবে হকার ইস্যুকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা সংঘর্ষের আগ পর্যন্ত আশ্রয় প্রশ্রয় দিয়ে আসছিলেন বামপন্থীরা। পরবর্তীতে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ার পর তাদের দায়িত্ব নিতে অস্বীকৃতি জানান বাম নেতারা। তখন সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের উপর দোষ চাপিয়ে নিজেদের আড়াল করতে চাচ্ছিলেন তারা। অথচ সংঘর্ষের একদিন আগ পর্যন্তও আন্দোলনের সাথে সার্বিকভাবে যুক্ত ছিলেন তারা।
নতুন করে এসপি হারুন অর রশিদের কঠোর পদক্ষেপের পর হকাররা বসতে সাহস পাননি। বেশ কয়েকবার একত্রিত হয়ে শামীম ওসমানের কাছে গিয়ে সহায়তা চাইলে শামীম ওসমান তাতে না করেছেন বলে বিশ্বস্থ সূত্রে জানা যায়। কারও সহায়তা না পেয়ে নিজেদের পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে গুছিয়ে উঠতে পারছিলেন না তারা। তবে বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) হঠাৎ করেই নিজেদের সংগঠিত করে শহরে আন্দোলনে নামেন হকাররা।
এ সময় হকার নেতাদের সাথে একাগ্রতা প্রকাশ করে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন হাফিজুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর আলম গোলক ও বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টির সাধারণ সম্পাদক আবু হাসান টিপু সহ বেশ কয়েকজন শ্রমিক নেতা। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসক অফিসে গিয়ে স্মারকলিপি জমা দেন তারা।
নতুন করে হকারদের আন্দোলনে বাম নেতাদের জড়িয়ে যাওয়ায় নারায়ণগঞ্জের খোদ বামপন্থীরাই বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। তাদের দাবি, শুধু ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলের উদ্দেশেই নতুন করে মাঠে নেমেছেন এ সকল বাম নেতারা।
বাসদ-এর জেলা সমন্বয়ক নিখিল দাশ বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, ‘হকারদের চলমান আন্দোলনে বাসদের কোনো সমর্থন নেই। নতুন করে শুরু করা আন্দোলনের সাথেও আমাদের সম্পৃক্ততা নেই। তবে তাদের পুনর্বাসন হোক এটি আমাদের তরফ থেকে দাবি।’
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, কতিপয় বাম নেতাদের এমন স্ববিরোধী অবস্থান হকার ইস্যুকে নতুন করে সামনে টেনে আনছে। পূর্বের ঘটনা থেকে শিক্ষা না নিয়ে আবারো হকারদের নিয়ে এই রাজনীতির দায় এরা এড়াতে পারেন না। সুতরাং হকারদের সাথে যারা আছেন এবং যারা নেই উভয়কেই চিহ্নিত করা প্রয়োজন।