বন্যায় বগুড়ায় ২ কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে
বগুড়ায় বন্যা এবং অতি বৃষ্টিতে ডুবে গেছে তিন শতাধিক পুকুর। এতে ভেসে গেছে অন্তত দুই কোটি টাকার মাছ। মাথায় হাত পড়েছে দুই শতাধিক মাছচাষির।
জাল দিয়ে পুকুরের চারপাশ ঘিরে রেখে আটকানো যায়নি পুকুরের মাছ। তীব্র পানির স্রোত আর দ্রুত পানি বৃদ্ধির কারণে এসব পুকুরের মাছ ভেসে নদীতে চলে গেছে। যমুনা নদী পানি কমতে শুরু করলেও অধিকাংশ পুকুরের এখনও পাড় জেগে ওঠেনি।
সোমবার (২২ জুলাই) যমুনা নদীর পানি কমে বিপদসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সারিয়াকান্দি উপজেলার নিজবলাইল গ্রামের মৎস্যচাষি সালাউদ্দিন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, আমার তিন বিঘা পুকুর বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। পুকুরের মাছ ধরে রাখার জন্য অসংখ্য জাল চারপাশ দিয়ে ঘিরে দেওয়া হলেও পানির স্রোত জালসহ ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। কয়েক লাখ টাকার পোনা মাছ ছাড়াও বড় বড় মাছ ভেসে গেছে এক রাতে।
সোনাতলা উপজেলার দড়ি হাঁসরাজ গ্রামের আছালত জামান বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, অন্যর পুকুর লিজ নিয়ে মাছচাষ করেছিলাম। দুই বিঘা পুকুরে বন্যার পানিতে পুকুরের মাছ ভেসে গেছে।
বগুড়ার সোনাতলা, সারিয়াকান্দি ও ধুনট উপজেলায় বন্যাকবলিত এলাকায় ২২২টি পুকুর ডুবে গেছে। এর বাইরে বাঙ্গালী নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় গাবতলী ও শেরপুর উপজেলার শতাধিক পুকুর ডুবে গেছে।
বগুড়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বন্যাকবলিত সোনাতলা, সারিয়াকান্দি ও ধুনট উপজেলায় ডুবে যাওয়া ২২২টি পুকুরের আয়তন ৩৫ হেক্টর জমি। এসব পুকুরের ৭৪ মেট্রিক টন বিভিন্ন প্রজাতির ছোট বড় মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। এই তিন উপজেলায় মৎস্যচাষি ক্ষতির পরিমাণ এক কোটি ৭২ লাখ টাকা।
সোনাতলা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এমদাদ হোসেন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, মৎস্যচাষিদের চূড়ান্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা হচ্ছে। সরকারি সিদ্ধান্ত পাওয়া গেলে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের সহযোগিতা করা হবে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বন্যাকবলিত তিন উপজেলা ছাড়াও গাবতলী, শেরপুরসহ অন্যান্য উপজেলায়ও অতিবৃষ্টিতে প্রায় ১০০ পুকুর ডুবে গেছে। এসব পুকুর থেকে বেশির ভাগ মাছ ভেসে গেছে। বন্যার পানি নেমে গেলে কী করনীয়, ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের এ বিষয়ে গত ১৭ জুলাই থেকে শুরু হওয়া মৎস্য সপ্তাহে দিক নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।