মাগুরায় পানির অভাবে পাটচাষিদের দীর্ঘশ্বাস

  • আব্দুল্লাহ তারিক ,ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, মাগুরা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

পানির অভাবে কাঁটা হচ্ছে না পাট, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

পানির অভাবে কাঁটা হচ্ছে না পাট, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

আজ শ্রাবণের আমন্ত্রণে
দুয়ার কাঁপে ক্ষণে ক্ষণে –

শ্রাবণের এই আমন্ত্রণ গ্রহণ করেনি আকাশ। মাগুরাসহ দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টি নেই। তীব্র গরমের সঙ্গে রয়েছে রোদ্রের ঝলকানি। মাঠে দিশেহারা কৃষক, অবাক বিস্ময়ে ভাবছে কী করবে শতবর্ষের সোনালি আঁশ নিয়ে। পাট পচানোর জন্য পর্যাপ্ত পানি নেই। খালে-বিলে স্বল্প পানি থাকলেও তা মাঠ থেকে অনেক দূরে হওয়ায় উৎপাদন খরচ বাড়ছে পাটচাষিদের। এমন চিত্রের দেখা মেলে মাগুরা সদর উপজেলার কয়েকটি গ্রাম ঘুরে।

বিজ্ঞাপন

সদর উপজেলার গৌরিচরণপুর গ্রামের কৃষক নজরুল বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে জানান, মাগুরাতে বৃষ্টি নেই অনেকদিন, গাঙ পর্যন্ত পাট টেনে আনতে ভ্যান প্রতি ৪০০ টাকা করে খরচ হয়। ন্যায্য মূল্য না পেলে তাদের মরে যাওয়াই শ্রেয়।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/25/1564059166069.jpg
মাঠ থেকে অনেক দূরে এসে পাটে জাগ দিচ্ছেন কৃষকরা, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

 

বিজ্ঞাপন

পাট পরিষ্কার করছিলেন ছফেতারা বেগম, তিনি বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে জানান, ডোবায় পানি নেই, মাঠ থেকে তার ছেলে পাট কেটে ডাঙ্গায় ফেলে রেখেছে। এই পাঠ পরিষ্কার করা হলে তারপর পাট এনে জাগ দেয়া হবে। মাঠে পাট শুষ্ক হয়ে যাচ্ছে।

এদিকে, আমন ধান লাগানোর মৌসুম এসে গেলেও পাট কাটা হয়নি, তাই বাড়ছে চিন্তা। এই বছর পাটের ফলন ভালো হলেও শেষ হাসি হাসতে পারছে না কৃষকরা।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/25/1564059428862.jpg

 

মাগুরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা গোবিন্দ কুমার জোয়ার্দার বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে জানান, এ বছর মাগুরায় পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৬ হাজার ১১০ হেক্টর, যার মধ্যে মাগুরা সদর উপজেলায় ৯ হাজার ৭০০ হেক্টর, শ্রীপুর উপজেলায় ৮ হাজার ৭৩০ হেক্টর, শালিখা উপজেলায় ৩ হাজার ৯২৫ হেক্টর এবং মোহাম্মদপুর উপজেলায় ১০ হাজার ২০০ হেক্টর করে মোট ৩২ হাজার ৫৫৫ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে।

মাগুরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপমহাপরিচালক কৃষিবিদ মো. জাহিদুল আমিন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘ইতোমধ্যে মাগুরা জেলায় পানির অভাবে মাত্র ৩ শতাংশ পাট কর্তন করা হয়েছে। যা আশঙ্কাজনক। কৃষকদের রিবন রেটিং পদ্ধতিতে পাট পচানোর জন্য বলা হয়েছে।’

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/25/1564059479318.jpg
পানিতে পাট জাগ দেয়া হচ্ছে, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

 

এ বিষয়ে কৃষকদের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা অভিহিত করেছেন বলেও জানান তিনি। ডোবা ও খাল খননের কোনো পরিকল্পনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের নেই বলেও তিনি জানান।

রিবন রেটিং পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান, পাট কাঁচা অবস্থায় আঁশ আলাদা করে স্বল্প পরিসরে পচানোর পদ্ধতি হলো রিবন রেটিং পদ্ধতি। কৃষক ইচ্ছা করলে বড় চাড়ি বা পলিথিন বেষ্টিত স্থান ব্যবহার করতে পারে। এতে পাটের গুণগত মানের তারতম্য হবে না বলেও তিনি জানিয়েছেন।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/25/1564059535869.jpg
ভ্যানে করে জাগ দেয়ার জন্য পাট নিয়ে আসা হচ্ছে, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

 

চাষিদের কাছ থেকে জানা যায়, প্রতি বিঘা পাট চাষে খরচ হয় ১৪ থেকে ১৫ হাজার টাকা। একবিঘা জমিতে ১০-১২ মন পাট হয়, যার বর্তমান বাজারমূল্য ১৬ থেকে ১৮ হাজার টাকা।