টাইগারের ওজন ৪২ মণ!
পাবনার সফল গরু খামারি মিনারুল ইসলাম। দেশীয় পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজাকরণ করে আজ সফল খামারি সে। জেলার চাটমোহরের ছোট গুয়াখড়া গ্রামে তার খামারে একটি গরুর ওজন হয়েছে ৪২ মণ। নাম দেওয়া হয়েছে টাইগার। কোরবানির পশু হাটে টাইগার গরুটি ৩০ লাখ টাকায় বিক্রি করতে ইচ্ছুক মিনারুল।
উপজেলার ছোট গুয়াখড়া গ্রামের মৃত আলহাজ্ব আকুল প্রামাণিকের ছেলে মিনারুল ইসলাম। ১ বছর ৪ মাস আগে প্রতিবেশী এক বন্ধুর কাছ থেকে ১৫/১৬ মণ ওজনের গরু কিনে দেশীয় পদ্ধতিতে নিজের খামারে প্রথমবারের মতো গরু মোটাতাজাকরণ শুরু করেন মণিরুল। বর্তমানে তার টাইগার নামের গরুটির দৈর্ঘ্যতা ৯ ফুট, আর উচ্চতা সাড়ে ৫ ফুট। ফিজিয়ান জাতের এ গরুটির ওজন ৪২ মণ। কালো আর সাদা রঙ মিশ্রিত সুঠাম স্বাস্থ্যের অধিকারী টাইগারকে দেখতে প্রায় দূরদূরান্ত থেকে ছুটে যাচ্ছেন মানুষ।
মিনারুলের স্ত্রী জাকিয়া সুলতানা জানালেন, স্বামী স্ত্রী উভয়ই গরু পালন করছেন। তারা দুজনে ছাড়াও আরও দুজন এই গরু দেখাশুনা করছেন। গরুটির দেখভালের জন্য রাখা বারেক মোল্লা বলেন, 'আমার জীবনে এত বড় গরু কোনো দিন পালন করেনি। গরুটির স্বভাব সুলভ খুবই ভালো। তবে বেশি লোকের ভিড় দেখলে রেগে যায়।'
স্থানীয় গাজিউর রহমান বলেন, 'আমাদের গ্রামের গর্ব এই যে এমন বড় গরু আমরা আজও পাবনা জেলার মধ্যে দেখিনি।'
খামারি মিনারুলের ছোট ভাই সরকারি প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক আলতাফ হোসেন জানান, এ জেলার সবচেয়ে বড় গরু হওয়ায় দূরদূরান্ত থেকে গরুটি দেখতে তাদের বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছে মানুষজন।
আরও পড়ুন: ঝিনাইদহে দেখা মিলেছে ৩৫ মণ ওজনের গরু
তিনি বলেন, ‘গরুটির যদি ন্যায্য দাম পাওয়া যায়। তাহলে আগামীতে আরও বৃহৎ পরিসরে গরু পালন করা হবে।’
খামারি মিনারুল ইসলাম বলেন, ‘গরুটি ১ লাখ ৪২ হাজার টাকা দিয়ে ক্রয় করি। তখন ওজন ছিল ১৫ থেকে ১৬ মণ। ১ বছর ৪ মাস আগে কিনেছি। দেশীয় খাবার খাওয়ায় গরুটিকে মোটাতাজা করা হয়েছে। বর্তমান বাজার মূল্যের হিসাবে ৩০ লাখ টাকা চেয়েছি। গরুর ওজন ৪২ মণ ছাড়িয়ে গেছে। কাঙ্ক্ষিত দামে টাইগারকে বিক্রি করতে পারলেই খুশি।
পাবনা জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ আল মামুন হোসেন বলেন, 'পাবনা জেলায় এবারের কোরবানির উদ্দেশ্যে ২০ হাজারেরও অধিক খামারে গরু, ছাগল, ভেড়া, মহিষ মিলিয়ে ২ লাখ ১৮ হাজার পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। এটি জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করতে পারবে। এই পশু গুলো খামারিরা সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে হিষ্ট পুষ্ট করেছেন। এ পদ্ধতিতে কোনোভাবে ক্ষতিকারক রাসায়নিক বা ওষুধ প্রয়োগ করা হয়নি।'
তিনি বলেন, ‘দেশীয় খামারিরা যাতে তাদের পশু বিক্রির ক্ষেত্রে ন্যায্য মূল্য পায় সে জন্য ভারতীয় গরু আমদানি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ রাখা হয়েছে।’
অপরদিকে ঈশ্বরদী লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নের গরু খামারি কোয়েল বিশ্বাস জানালেন, গত বছর ৪০ লাখ টাকার গরু বিক্রি করেছেন। এবারে ৫০ লাখ টাকার পশু বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছেন। তিনি এবারে ২০টি গরু, ২০টি ছাগল ও ২০ ভেড়া বিক্রি করবেন।
পাশাপাশি ঈশ্বরদীর লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নের চর কামালপুরের মহিষের বাথান খামারি কর্নেল প্রামাণিক জানান, তার মহিষের বাথানে ১০০টি মহিষ রয়েছে। এক একটি মহিষের ওজন হবে প্রায় ৮ মণ। বর্তমানে ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা দাম উঠেছে।
তিনি আশা করছেন, প্রতিটি মহিষ বিক্রি হবে প্রায় ২ লাখ টাকায়।