বগুড়ায় তলিয়ে গেছে ১৯ হাজার হেক্টর ফসলি জমি
গাবতলী উপজেলার দড়িপাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুর রাজ্জাক দেড় বিঘা জমিতে বিভিন্ন জাতের গ্রীষ্মকালীন সবজি চাষ করেছেন। মৌসুমের শুরুতে ভালই বিক্রি করেছেন। কিন্তু এক সপ্তাহের মধ্যে বাঙ্গালী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে তার সবটুকু সবজি ক্ষেত ডুবে গেছে। জমিতে পানি আটকে যাওয়ায় পেঁপে গাছ হলুদ হয়ে গেছে। পটল এবং কাঁকরোল গাছ গুলো মরে বিবর্ণ হয়ে গেছে। আব্দুর রাজ্জাকের মত এই অঞ্চলের কৃষক রহিম, সলেমান,আব্দুস সালামের সবজির ক্ষেত ডুবে আছে পানির নিচে। শুধু সবজি নয় যারা আমন চারা রোপণ করেছিলেন তাদের জমিতেও এক কোমর পানি।
যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধিতে সৃষ্ট বন্যায় চরাঞ্চলের ফসল বিনষ্টের পর এবার বাঙ্গালী নদীর পানিতে পূর্ব বগুড়ার সব ধরনের ফসল পানিতে ডুবে গেছে। বাঙ্গালী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে নদীর পশ্চিম পাড়ের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে সব ফসলি জমি পানির নিচে। পূর্বপাড়ে দুই-তিন কিলোমিটার জুড়ে যমুনা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ পর্যন্ত পানিতে ডুবে গেছে। এছাড়াও এই এলাকার বাড়ি ঘর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও পানি উঠেছে।
এদিকে যমুনার পানি কমে বিপদসীমার কাছাকাছি চলে আসলেও বাঙ্গালীর পানি বৃদ্ধি অপরিবর্তিত রয়েছে।
রোববার (২৮ জুলাই) বেলা ১২ টায় বাঙ্গালী নদীর পানি বিপদ সীমার ৮৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানায়, বাঙ্গালী নদীর পানি এখন কমতে শুরু করবে।
গাবতলী উপজেলার নেপালতলী ইউনিয়নের ধলির চর গ্রামের কৃষক সেকেন্দার আলী বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, পানি কমলেও ফসল আর রক্ষা করা যাবে না। ধান পাট, সবজি সব পানির নীচে। এই অঞ্চলের কৃষকেরা বোরো চাষের লোকসান পুষিয়ে নিতে আমন করেছিলেন। বন্যার পানিতে সেই আমন চারাও তলিয়ে গেছে।
বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আঞ্চলিক অফিস সূত্রে জানা গেছে, বাঙ্গালী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে জেলার উত্তর পূর্ব অঞ্চলের সাত উপজেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সাত উপজেলার ১৯ হাজার ৩৬৬ হেক্টর জমির ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৬৬ হাজার ৬৩৫ টি কৃষক পরিবার।
কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল আজিজ বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, সবচেয়ে ক্ষতি হয়েছে সারিয়াকান্দি,সোনাতলা ও ধুনট উপজেলায়। ১৭ হাজার ৫৬৩ হেক্টর জমির ফসল বিনষ্ট হয়েছে। বন্যার পানি নেমে গেলে প্রায় দুই হাজার হেক্টর জমির ফসল পাওয়া যাবে।