হাসপাতালের সীমানা প্রাচীর নেই, বাড়ছে বখাটেদের উৎপাত

  • কাজল সরকার, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, হবিগঞ্জ, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম।

নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম।

চোর-ডাকাতের উৎপাত ও চিকিৎসক সংকটসহ নানা সমস্যায় ভুগছে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। এছাড়া সীমানা প্রাচীর না থাকায় রাতে হাসপাতালের ভেতর বখাটেদের উৎপাত বেড়েছে। ফলে রোগী ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দুর্ভোগের যেন শেষ নেই।

এদিকে, হাসপাতালের সীমানা প্রাচীর নির্মাণের জন্য কাজ শুরু হলেও মামলা সংক্রান্ত জটিলতায় তা বন্ধ আছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পার্শ্ববর্তী বাসিন্দা এনাম আহমেদ চৌধুরী জায়গা সংক্রান্ত জটিলতা দেখিয়ে হবিগঞ্জ আদালতে একটি মামলা করেছেন।

বিজ্ঞাপন

জানা গেছে, ১৩টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার প্রায় ৫ লাখ মানুষের চিকিৎসা সেবার একমাত্র ভরসা নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। এছাড়া বানিয়াচং ও বাহুবল উপজেলাসহ পার্শ্ববর্তী সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজার জেলার অনেক মানুষও এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি কাগজে কলমে ৫০ শয্যা হলেও চিকিৎসা চলে ৩১ শয্যায়।

তাছাড়া আছে জনবল সংকটও। হাসপাতালটিতে ২২ জনের স্থলে কর্মরত রয়েছেন মাত্র পাঁচজন ডাক্তার। এরমধ্যে ৩ জন হাসপাতালে এবং বাকি দুইজন ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দায়িত্ব পালন করেন। আর সেবা দেয়ার জন্য বিপুল সংখ্যক নার্সের প্রয়োজন থাকলেও আছেন মাত্র ১২ জন।

বিজ্ঞাপন

হাসপাতালের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজে নিয়োজিত সাইদুর রহমান এন্টারপ্রাইজের সাব কন্ট্রাক্টর মো. আলী হোসেন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘কাজ শুরুর পর জমির মালিক এনাম আহমেদ চৌধুরী আমাকে বাঁধা দেন। এ সময় আমি কাজ চালিয়ে গেলে তিনি অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। বিষয়টি আমি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা আমাকে কাজ বন্ধ রাখতে বলেন।’

হাসপাতালের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ডা. ফাতেমা তুজ জহুরা বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তারসহ বিভিন্ন স্টাফ সংকট রয়েছে। এছাড়া হাসপাতালের সীমানা প্রাচীর না থাকায় সন্ধ্যার পর এখানে বখাটেরা আড্ডা বসায়। আমরা এর প্রতিবাদ করলে আমাদের লাঞ্ছিত করা হয়। এছাড়া হাসপাতাল কোয়ার্টারে চুরির ঘটনাও ঘটেছে।’

নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আব্দুস সামাদ বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘ডাক্তার ও জনবল সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। ফলে বিশাল সংখ্যক রোগীদের চিকিৎসা দিতে আমাদের হিমশিম খেতে হয়। তাছাড়া সীমানা প্রাচীর না থাকায় বখাটেদের উৎপাত বেড়েছে।’

উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. গোলাম মোস্তফা বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘হাসপাতালের স্টাফ বাড়ানোর জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করা হয়েছে। এছাড়া বাউন্ডারি দেয়াল নির্মাণের ক্ষেত্রেও জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। আদালত আমাদের কাছে জবাব চেয়েছেন। আমরা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আদালতের কাছে পেশ করেছি। আশা করছি শিগগিরই এ সমস্যার সমাধান হবে।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একজন জানান, কয়েকটি গ্রামের মানুষের যাতায়াতের রাস্তা দখল করে ঘর নির্মাণ করেছেন এনাম আহমেদ। এখন হাসপাতালের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করতে হলে তার ঘরটি ভেঙে ফেলতে হবে। তাই আদালতে মামলা করেছেন তিনি।

এ বিষয়ে জানতে মামলার বাদী এনাম আহমেদ চৌধুরীর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো কথা বলতে রাজি হননি।