জলমহালে পাট জাগ দেওয়ায় ভেসে উঠেছে মরা মাছ
রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার সদর ইউনিয়নে পাইককান্দি-চরআড়কান্দি বদ্ধ জলমহালে পাট জাগ দেওয়ায় ভেসে উঠেছে মরা মাছ। এতে অনেক টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন জলমহালের ইজারাদার কর্তৃপক্ষ। এছাড়া মাছ মেরে লুটপাট করারও অভিযোগ করছে তারা।
শনিবার (৩ আগস্ট) সকাল ৭টায় সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, জলমহালে জামালপুর ইউনিয়নের শ্রীরামপুর গ্রামের বেশ কয়েকজন বাসিন্দা সারিবদ্ধ করে পাট জাগ দিয়েছেন। পাট জাগ দেওয়ার ফলে পানি বিষাক্ত হয়ে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ মরে ভেসে উঠেছে।
জলমহলটির ইজাদার দারচী মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির সভাপতি মো. আখের আলী মন্ডল বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘২০১৯-২১ সাল তিন বছরের জন্য জলমহলটি রাজবাড়ী জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে প্রতি বছরের জন্য ৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা দিয়ে ইজারা নিয়েছি। এরপর এখানে প্রায় ১৫ লাখ টাকার মাছ ছেড়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘পাট জাগ দেওয়ার জন্য শ্রীরামপুর গ্রামের কয়েকজনকে নদীর পাশের ইউনিটের কথা বলেছিলাম। কিন্তু তারা আমার কথা না শুনে এখানেই জোর করে পাট জাগ দিয়েছে। বিশেষ করে শ্রীরামপুর গ্রামের আব্দুল মালেক শেখ ও ওহিদ ফকীরের ছেলেরাসহ বেশ কয়েকজন পাট জাগ দিয়েছে। শুধু তাই না, পাট জাগ দিতে নিষেধ করায় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে এখান থেকে প্রতিনিয়তই আমাদের মাছ চুরি করে লুটপাট করছে।’
চড়আড়কান্দি গ্রামের বাসিন্দা শিহাব শেখ, টিটো শেখ ও এনামুল এবং পাইককান্দি ভাটিপাড়া গ্রামের মো. শিহাবুল ইসলাম বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘এই জলমহালটি সরকারের কাছ থেকে লিজ নিয়ে একটি মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি মাছ ছেড়েছে। কিন্তু এখানে পাট জাগ দেওয়ায় সিলভার কার্প, রুই, কাতল, তেলাপিয়া ও পুটিকাপসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ মরে গেছে। সিলভার কার্প মাছগুলো ভেসে উঠেছে। আর বাকি মাছগুলো মরে তলিয়ে যাচ্ছে।এছাড়া শ্রীরামপুর গ্রামের ওহিদ ফকীরের ছেলেরা এখান থেকে জোর করেই মাছ ধরে নিয়ে যায়।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ওহিদ ফকীরের ছেলে আনোয়ার ফকীর বলেন, ‘আমরা পাট জাগ দিয়েছি সত্য। তবে মাছ মরে যাবে এটা বুঝতে পারি নাই।’
এছাড়া মাছ চুরি করে মারার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা রবিউল হক বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘জলমহালটির মধ্যে অতিরিক্ত পাট জাগ দেওয়ার ফলে পানি বিষাক্ত হয়ে মাছ মরে গেছে। তবে অল্প অল্প করে পাট জাগ দিলে পানি বিষাক্ত হতো না। জলমহালটির মধ্যে শ্যালো মেশিন দিয়ে খুব দ্রুত পানি দেওয়া প্রয়োজন। তাহলে হয়তো কিছুটা ক্ষতি কমতে পারে।’
বালিয়াকান্দি সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. নায়েব আলী শেখ বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত সমিতির সদস্যরা আমার কাছে এসেছিল। আমি তাদেরকে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছি। তবে একজনকে ক্ষতি করে অতিরিক্ত পাট জাগ দেওয়াটা ঠিক হয়নি। যেহেতু তারা সরকারের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা দিয়ে লিজ নিয়ে এসেছে।’