টুং টাং শব্দে মুখরিত সিরাজগঞ্জের কামার পল্লী

  • সোহেল রানা, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, সিরাজগঞ্জ
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ঈদুল আজহার আগে ব্যস্ত সময় পার করছেন সিরাজগঞ্জের কামাররা/ ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

ঈদুল আজহার আগে ব্যস্ত সময় পার করছেন সিরাজগঞ্জের কামাররা/ ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

আসন্ন ঈদুল আজহা সামনে রেখে ব্যস্ততা বেড়েছে সিরাজগঞ্জের কামার পল্লীতে। রাত-দিন হাতুড়ি ও লোহার টুং টাং শব্দে সরগরম এলাকা। আর নাওয়া-খাওয়া ভুলে অবিরাম কাজ করে যাচ্ছেন কামাররা। তৈরি করছেন কাটরি, হাঁসুয়া, ছুরি, চাপাতি, দা, বঁটি। পাশাপাশি চলছে মোটরচালিত মেশিনে পুরাতন সরঞ্জামে শান দেওয়ার কাজ। আগামী ১২ আগস্ট ঈদুল আজহা। যতই দিন ঘনিয়ে আসছে ততই বাড়ছে কামারদের ব্যস্ততা।

সরেজমিনে দেখা যায়, জেলার ৯ উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার ও কামার পল্লীতে ব্যস্ত কামাররা। সারা বছর কাজের চাপ না থাকলেও ঈদুল আজহার আগে কাজের চাপ বাড়ে। কামারদের দাবি, এই কোরবানির মৌসুমেই তাদের সবচেয়ে বেশি কাজ হয়।

বিজ্ঞাপন

তবে কয়লার দাম বেশি হওয়ায় অন্য বারের চেয়ে এবার ছুরি, দা, বটির দাম কিছুটা বেশি বলে জানান কামাররা। আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়ায় কামার শিল্প বিলুপ্তপ্রায়। সময়ের সঙ্গে তাল মেলাতে পারছেন না এ শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা। উল্টো প্রযুক্তির দাপটে ক্রমেই মার খাচ্ছে এ শিল্প। বছরের ১১ মাস কামারশালায় তেমন একটা কাজ থাকে না বললেই চলে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/08/1565263194575.gif

বিজ্ঞাপন

এদিকে, কোরবানির পশুর পাশাপাশি প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম কিনতে বা পুরাতন সরঞ্জামে শান দিতে ভুলছেন না মুসল্লিরা। এ জন্য ভিড় জমাচ্ছেন কামার পল্লীতে। অনেকে পছন্দ করে কিনছেন ছুরি, দা, কুড়াল, চাপাতি, হাঁসুয়া। সঙ্গে মাংস কাটার জন্য কাঠের গুঁড়িও কিনছেন অনেকে।

সলঙ্গা বাজারের কামার পল্লীর বিভিন্ন দোকান ঘুরে জানা গেছে, প্রতিটি কাটারি বিক্রি হচ্ছে প্রকারভেদে ২০০ থেকে এক হাজার ৫০০ টাকা, দা ২০০ থেকে ৩০০ টাকা, কেজি হিসেবে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, হাঁসুয়া ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা ও ছোট ছুরি ১৫০ থেকে ৩০০ টাকা। এছাড়া বঁটি প্রতি পিস ২০০ থেকে ৩০০ টাকা।

ক্রেতাদের দাবি, এ বছর পশু কোরবানির উপকরণের দাম তুলনামূলক বেশি। আর কামারদের দাবি, কয়লা ও লোহার দাম বেড়ে যাওয়ায় সরঞ্জামাদির দাম কিছুটা বাড়ানো হয়েছে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/08/1565263218726.gif

সিরাজগঞ্জ সদরের ইয়াসিন কামার জানান, চাপ বেশি থাকায় রাতদিন কাজ করতে হচ্ছে তাদের। নতুন সরঞ্জামের চাহিদার পাশাপাশি পুরাতনগুলোতে শান দেওয়া হচ্ছে। তবে এ বছর বেশিরভাগ ক্রেতা পুরাতন সরঞ্জাম মেরামত করতে নিয়ে আসছেন। বিক্রি একটু কম হচ্ছে।

সলঙ্গা বাজারের কামার পল্লীর আব্দুস সামাদ বলেন, '৩৫ বছর ধরে এই পেশায় যুক্ত আছি। আমার পূর্বপুরুষরাও এই কাজ করতেন। এখন সারা বছর তেমন কোনো কাজ থাকে না। তবে কোরবানির ঈদের আগে কাজের চাপ থাকে। খুব বেশি বিক্রি হচ্ছে না, ঈদের এক-দুই দিন আগে বিক্রি বাড়বে।’

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/08/1565263248324.gif

আব্দুস সাত্তার নামে এক ক্রেতা বলেন, ‘ঈদের আর কয়েকদিন বাকি। তাই আগে থেকেই পশু জবাইয়ের সরঞ্জাম কিনে রাখছি।’ আরেক ক্রেতা ইব্রাহিম হোসেন বলেন, ‘পশু জবাইয়ের সরঞ্জাম কেনার পাশাপাশি পুরাতনগুলোতে শান দিতে নিয়ে এসেছি।’

এ বিষয়ে সলঙ্গা বাজার বণিক সমিতির সভাপতি রায়হান গফুর বলেন, ‘কেউ যাতে পণ্য অধিক দামে বিক্রি করতে না পারেন এবং কেউ যাতে হয়রানির শিকার না হন, সে জন্য নিয়মিত বাজার মনিটরিং করছি।’