উপকারে আসছে না ৬৮ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত বাসস্ট্যান্ড
গত আট বছরেও চালু করা সম্ভব হয়নি ৬৮ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত পাবনার চাটমোহরের নতুন বাসস্ট্যান্ডটি। বর্তমানে এলাকাটি মাদকসেবীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। এছাড়া যত্রতত্র নির্মাণ সামগ্রী রাখায় জায়গাটি দখল হয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে এসব বিষয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছে না পৌর কর্তৃপক্ষ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাসস্ট্যান্ডটিতে টিকিট কাউন্টার, দোকানঘর ও শৌচাগার থাকলেও নেই শুধু যানবাহন ও কোলাহল। ধুলার আস্তরণে ঢেকে গেছে সব। আর সন্ধ্যার পর সেখানে ভুতুড়ে পরিবেশ সৃষ্টি হয়। বসে মাদকসেবীদের আড্ডা।
এদিকে এতো টাকা ব্যয় করে বাসস্ট্যান্ডটি নির্মাণ হওয়ার পরে তা ব্যবহার না হওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তারা জানান, শহরে যানবাহনের চাপ কমাতে ২০১১ সালে চাটমোহর-জোনাইল সড়কের পাশে গাইনগড় এলাকায় দুই বিঘা জমির উপর বাসস্ট্যান্ডটি নির্মাণ করে চাটমোহর পৌরসভা। এ জন্য উপজেলা পরিষদ নগর উন্নয়ন প্রকল্প থেকে ৬০ লাখ টাকা ঋণ নেয় এবং পরে তহবিল থেকে ব্যয় করা হয় ৮ লাখ টাকা। মোট ৬৮ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত বাসস্ট্যান্ডটি ঘটা করে উদ্বোধনও করা হয়। কিন্তু পরে আর চালু হয়নি।
জানা গেছে, সম্প্রতি বর্তমান মেয়র মির্জা রেজাউল করিম দুলাল সাপ্তাহিক হাট বসিয়ে বাসস্ট্যান্ডটি চালুর উদ্যোগ নেন। এজন্য তিনি বাসস্ট্যান্ড জুড়ে ২৮টি সোলার প্যানেল বসান, সুপেয় পানির পাম্প বসান এবং বাইরে আরও একটি শৌচাগার নির্মাণ করেন। তবে তার কোনো উদ্যোগ সফল হয়নি।
অভিযোগ আছে, সরকারি অর্থ ব্যয় করে নির্মাণ করা বাসস্ট্যান্ডটি সাধারণ মানুষের কোনো উপকারে আসছে না। অথচ সব ধরনের যানবাহন প্রতিদিন চাটমোহর-পাবনা সড়কের ওপর দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠা-নামা করানো হচ্ছে। পাশাপাশি ট্রাক থেকে মালামাল লোড-আনলোড করানো হয়। এতে পৌর সদরের মধ্যে প্রতিনিয়ত যানজট লেগে থাকে। কাগজে কলমে সচল থাকলেও দীর্ঘদিন অচল অবস্থায় পড়ে আছে পৌর বাসস্ট্যান্ডটি। এতে সাধারণ মানুষ দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।
এ বিষয়ে চাটমোহর পৌরসভার মেয়র মির্জা রেজাউল করিম দুলাল বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘অনেক চেষ্টা করেও বাসস্ট্যান্ডটি চালু করতে পারছি না। সংযোগ সড়ক না করে অপরিকল্পিতভাবে বাসস্ট্যান্ডটি নির্মাণ করায় কেউ এটি ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছে না। ফলে আগের মেয়রের ভুলের খেসারত আমাকে দিতে হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাসস্ট্যান্ডটি নির্মাণের জন্য নেয়া ঋণের টাকা এখনো পৌর তহবিল থেকে পরিশোধ করতে হচ্ছে। তবে বাসস্ট্যান্ডটি চালুর চেষ্টা করে যাচ্ছি।’
কয়েকজন বাস চালক জানান, বাসস্ট্যান্ডটি পৌর সদরের সড়ক থেকে কিছুটা দূরে অবস্থিত এবং সেখানে গাড়ি পার্কিংয়ের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। তাই সেখানে কেউ যেতে চায় না।
তবে সাধারণ যাত্রীদের দাবি, বাসস্ট্যান্ড থেকে নিরাপদে যাতায়াত করা সম্ভব। ফলে তাদের আশা, দ্রুত বাসস্ট্যান্ডটি চালুর উদ্যোগ নেবেন সংশ্লিষ্টরা।