চুয়াডাঙ্গায় নিউমোনিয়ায় ৭দিনে আক্রান্ত ২৫০ শিশু
ডেঙ্গু ও ডায়রিয়ার পর চুয়াডাঙ্গায় হঠাৎ করে শিশুদের নিউমোনিয়া রোগের প্রকোপ বেড়ে গেছে। গত এক সপ্তাহে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে নিউমোনিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে আড়াই শতাধিক শিশু। এছাড়া হাসপাতালের বহির্বিভাগে প্রতিদিন ৫০/৭০ জন নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশুকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালের চিকিৎসকরা বলছে গরম বেড়ে যাওয়ার কারণে হঠাৎ করেই চুয়াডাঙ্গায় নিউমোনিয়া রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে।
সদর হাসপাতাল সূত্র জানায়, গত ২৪ আগস্ট থেকে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে শিশুরা ভর্তি হতে শুরু করে। এদিকে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের বেড সংখ্যা রয়েছে মাত্র ১৩টি। কিন্তু বেডের তুলনায় সাত গুন বেশি রোগী এখন হাসপাতলে ভর্তি রয়েছে।
রোববার (১ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে দেখা যায়, দুপুর পর্যন্ত নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশু ভর্তি ছিল ৯৬ জন। বেড না পেয়ে রোগীর স্বজনরা শিশুদের নিয়ে ওয়ার্ড ও পাশের গাইনি ওয়ার্ডের মেঝেতে বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। হঠাৎ করে নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশু রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ওয়ার্ডে রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমসিম খাচ্ছে দায়িত্বরত চিকিৎসক ও নার্সরা।
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা নীলমনিগঞ্জের রিতা খাতুন বলেন, তার মেয়ে গত সাতদিন যাবৎ নিউমোনিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।
নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত রায়েশার দাদী মর্জিনা বলেন, তার নাতনী হঠাৎ করেই বাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়লে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। পরে ডাক্তার জানান রায়েশা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি হবার পর বেড না পেয়ে বারান্দায় কোনরকমে চিকিৎসা নিচ্ছি।
আলুকদিয়ার ইউনিয়নের আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, তার ভাইয়ের ছেলেকে নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এখনও তারা কোনো বেড পায়নি। ওয়ার্ডে রোগীর সংখ্যা এত বেশি যে তীব্র গরমে শিশুরা আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছে।
সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার আসাদুর রহমান মালিক খোকন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, হঠাৎ করে আবহাওয়ার পরিবর্তন হওয়ায় শিশুদের মাঝে নিউমোনিয়া রোগ ছড়িয়েছে। এ সময় আক্রান্ত শিশুকে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা দিতে হবে। মায়ের বুকের দুধ পান বন্ধ করা যাবে না।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শামীম কবির বলেন, বেশ কিছুদিন চুয়াডাঙ্গায় ভ্যাপসা গরম পড়ছে। গরমের কারণে ডায়রিয়া রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছিল। গরমের কারণে শিশুরা অতিরিক্ত ঘেমে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে পড়ছে। এখন শিশুর জন্য আলাদা যত্ন নেওয়া দরকার। হালকা পানি নরম কাপড়ে নিয়ে শিশুর শরীরের ঘাম মুছে দিতে হবে।