প্রচণ্ড গরমে দুর্বিষহ ঠাকুরগাঁওয়ের জনজীবন
প্রচণ্ড গরমে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে ঠাকুরগাঁওয়ের জনজীবন। টানা ভ্যাপসা গরম আর অনাবৃষ্টির কারণে মানুষের প্রাণ প্রায় ওষ্ঠাগত। সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) ঠাকুরগাঁও শহরের বিভিন্ন স্থান ঘুরে তীব্র গরম আর সূর্যের প্রখর তাপে মানুষের বিপর্যস্ত জীবনের চিত্র দেখতে পাওয়া যায়।
ঘরে-বাইরে কোথাও যেন একটু স্বস্তি নেই। মানুষও প্রচণ্ড রোদে ঘর থেকে সহজে বের হচ্ছেন না। দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষ পড়েছেন সবচেয়ে বিপাকে। তীব্র রোদ ও প্রচণ্ড গরম উপেক্ষা করে জীবিকার তাগিদে বের হতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।
ক্লান্তি দূর করতে গাছের ছায়ায় আশ্রয় নিচ্ছেন রিকশাচালকরা। গরমের কারণে বেশ চাহিদা দেখা গেছে ঠান্ডা পানি, আখের শরবত, আনারস এবং শসার। শহরের বিভিন্ন স্থানে এসবের ভ্রাম্যমাণ দোকান নিয়ে বসেছেন মৌসুমী ব্যবসায়ীরা।
পঞ্চগড় আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে, ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড়ে গত একমাস ধরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৩৭ দশমিক ৭ ডিগ্রী ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২০ দশমিক ৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস।
এদিকে শিক্ষার্থীদের ছাতা মাথা নিয়ে স্কুল-কলেজে যেতে দেখা গেছে। শিক্ষার্থীরা তৃষ্ণা মিটাতে ছুটে যাচ্ছেন সড়কের ধারে থাকা ভ্রাম্যমাণ শরবতের দোকানগুলোতে।
পথচারী জয়নাল বার্তাটোয়েন্টিফোরকে জানান, যা গরম পড়েছে তাতে থাকা খুব কষ্টদায়ক। বাসা থেকে বের হতে ইচ্ছে করে না। কিন্তু কি করার বের হতেই হবে।
শহরের সার্কিট হাউজের সামনে গাছের নিচে বসে রয়েছেন রিকশাচালক জাহিদ হাসান। একটু কাছে যেতেই দাঁড়িয়ে পড়লেন তিনি। বলে উঠলেন, ভাইরে এবার যা গরম। কোথাও একটু বাতাস নাই। গাছের নিচে গরম কম আছে তাই একটু বিশ্রাম নিচ্ছি।
প্রচণ্ড গরম সহ্য করতে না পেরে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন নারী, শিশু ও বৃদ্ধরা। জেলার হাসপাতালে বাড়ছে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। হাসপাতালে প্রতিদিন ভর্তি হচ্ছেন শিশুসহ নানা বয়সের রোগী।
হাসপাতালের তথ্য মতে, গরমের কারণে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ১৫০ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এসব রোগী শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত।
ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা: শাহজাহান নেওয়াজ বার্তাটোয়েন্টিফোরকে জানান, কিছুদিন ধরেই প্রচণ্ড গরম পড়েছে। যার ফলে শিশুদের মধ্যে ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগের প্রকোপ বাড়ছে। পাশাপাশি বয়স্করাও ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট ও হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছেন।
গরমে শিশুদের পরিচর্যার বিষয়ে তিনি বলেন, এই গরমে বাচ্চাদের সবসময় নরম পোশাক পরিয়ে রাখতে হবে। ঘাম যাতে শরীরে না বসে সেদিকে মায়েদের খেয়াল রাখতে হবে। শিশুদের ঘনঘন তরল জাতীয় খাবার খাওয়নোর পরামর্শ দেন তিনি।