নেত্রকোনায় ইজিবাইক চালক হত্যা, গ্রেফতার ৩
নেত্রকোনার দুর্গাপুর থানা পুলিশ ইজিবাইক চালক সাইদুল ইসলাম (২৭) হত্যার রহস্য উদঘাটনসহ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তিন আসামিকে গ্রেফতার করেছে।
নেত্রকোনার পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সী বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) এক প্রেস-ব্রিফিংয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, দুর্গাপুর উপজেলার পশ্চিম বিলাশপুর গ্রামের মৃত সদর আলীর ছেলে ইজিবাইক চালক (ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা) সাইদুল ইসলাম গত ২ সেপ্টেম্বর সকালে ইজিবাইক নিয়ে বের হয়ে আর ফিরে আসেননি এবং তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও বন্ধ থাকায় স্ত্রীসহ পরিবারের লোকজন তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন।
সাইদুলকে কোথাও খুঁজে না পেয়ে পরের দিন (৩ সেপ্টেম্বর) তার স্ত্রী দুর্গাপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
এদিকে, ৫ সেপ্টেম্বর রাত ১০টার দিকে ভারতীয় সীমান্তবর্তী মিনকিফান্দা গ্রামের মরাখলা পাহাড়ের পাশে বান্দরের টিলায় হাত মুখ বাঁধা অবস্থায় এক অজ্ঞাত ব্যক্তির অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
পরদিন খবর পেয়ে সাইদুলের স্ত্রীসহ পরিবারের অন্যরা থানায় গিয়ে মরদেহের গায়ে জামা কাপড় দেখে এটি সাইদুলের মরদেহ বলে শনাক্ত করেন। এ ব্যাপারে নিহত সাইদুলের স্ত্রী আকলিমা আক্তার বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের নামে ৮ সেপ্টেম্বর দুর্গাপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার প্রেক্ষিতে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। তদন্তে ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার কাঁঠালডাংড়ি গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে শাহীন ওরফে মোল্লা (৩৫), শেরপুর জেলার পাকুরিয়া গনই মমিনাকান্দা গ্রামের আশরাফুল ওরফে আশারুলের ছেলে মানিক মিয়া (২৭) এবং নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুর উপজেলার লক্ষীপুর গ্রামের কমর উদ্দির ওরফে কেনু মেম্বারের ছেলে সেকুল ইসলামের (২৭) নাম উঠে আসে।
জেলা পুলিশের একটি দল আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) প্রথমে সেকুলকে দুর্গাপুর উপজেলার লক্ষীপুর বাজার থেকে গ্রেফতার করে। পরে তাকে নিয়ে অভিযান চালিয়ে ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার উঁচাখিলা বাজার থেকে সবুজ মিয়া নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার এবং তার কাছে থাকা সাইদুলের ইজিবাইকটি উদ্ধার করে।
গ্রেফতারকৃত আসামিদের দেওয়া তথ্য মতে সেদিন গভীর রাতে শেরপুর সদর উপজেলার পাকুরিয়া গণই মমিনাকান্দা থেকে হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী মানিক মিয়াকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
গত মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকালে আসামিদেরকে নেত্রকোনা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে আসামিরা ১৬৪ ধারায় হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে বলেও জানান পুলিশ সুপার।